• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড়

Reporter Name / ১৩৬ Time View
Update : বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : রাজশাহীতে ৮ শর্তে বিভাগীয় গণসমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। আগামী ৩ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ) হবে গণসমাবেশ। এরই মধ্যে সমাবেশের আগে ১০ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি।

অন্যদিকে সমাবেশকে ঘিরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে মামলা ও ধরপাকড়। রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় গতকাল ও আজ বুধবার মিলিয়ে ৭২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া প্রায় ৪২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং হাজার খানেক অজ্ঞাত নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক রাতে বিএনপির ৬২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ১১, শিবগঞ্জে ১৩, নাচোলে ১৯, গোমস্তাপুরে ১৪ ও ভোলাহাটে ৫ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় থানা-পুলিশ। পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিস্ফোরক আইনের মামলায় আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের একের পর এক মামলা করার অভিযোগ করেছে বিএনপি। ১০ দিনে জেলার ৫ থানায় বিস্ফোরক আইনে ৫টি মামলা হয়েছে বলে দাবি বিএনপি নেতাদের। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বিভাগীয় গণসমাবেশ ঠেকাতে নেতা-কর্মীদের নামে পুলিশ এসব ‘গায়েবি মামলা’ করছে বলে অভিযোগ তাদের। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া জানান, পুলিশের সাজানো মামলায় প্রায় ৪ শতাধিক কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। কাউকে বাড়ি থেকে, কাউকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা রাস্তা থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী
নাশকতার মামলায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জুকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে বাগমারার দেউলা চারমাথা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনিরুজ্জামান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক। বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম।

বাঘা (রাজশাহী)
রাজশাহীর বাঘায় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপির তিন নেতাকে মামলায় গ্রেপ্তার করে বাঘা থানা-পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোখলেচুর রহমান মুকুল, জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম (শফি), উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফিরোজ হোসেন।

গত ১৯ নভেম্বর রাতে পাকুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ ১৫০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বাঘা থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার নাসিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দস্তুল হোসেনকে। এ ছাড়া এজাহারে কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে কয়েকজনকে।

পুঠিয়া (রাজশাহী)
রাজশাহীর পুঠিয়ায় নাশকতা মামলায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম মুক্তাকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) ভোররাতের দিকে পুঠিয়া সদরের কাঠালবাড়িয়া গ্রামের বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, স্থানীয় বিএনপির কর্মী সমাবেশ ঘিরে গত ২১ নভেম্বর রাতে পুঠিয়ার মোল্লাপাড়া বাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ ১৬ জনের নামে ও আরও শতাধিক অজ্ঞাতনামা আসামি করে নাশকতার মামলা দায়ের করে।

এ মামলায় গত ২১ নভেম্বর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক খোরশেদ আলমকে মোল্লাপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির ২০ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) গভীর রাতে রায়গঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জুয়েল আকন্দ বাদী হয়ে রায়গঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। রায়গঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল, জেলা বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক রেজাউল করীম খানসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার মামলায় বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তান (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তাড়াশ-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের লাউতা চার মাথা আকবর আলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তালম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোজ্জামেল হক মজনু বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ রাতভর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার তালম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সোহরাব হোসেন (৫৫), ইউনিয়ন যুব দলের আহ্বায়ক মো. দিদার খাঁন (৪২), তাড়াশ উপজেলা যুব দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাজিব আহম্মেদ মাসুম (৩৮), বারুহাস ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন সরকার (৪৫) ও মাধাইনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ (৪০)।

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ও বেলকুচিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে খুকনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ আফাজ উদ্দিন বেপারী বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া গত রোববার রাতে বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ উৎস বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এনায়েতপুর থানার ওসি আনিছুর রহমান।

আরবিসি/৩০ নভেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category