• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন

গ্রাহক পর্যায়েও বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

Reporter Name / ১৪০ Time View
Update : সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক: পাইকারি পর্যায়ে ঘোষণার পর পরই গ্রাহক পর্যায়েও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো।

ইতোমধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে কোম্পানিগুলোর অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন বিপিডিবি, বিআরইবি ও ডিপিডিসর একাধিক কর্মকর্তা।

সোমবার দুপুরের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই ঘোষণার পরই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি চলে আসে আলোচনায়। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ বাজারজাত করা কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের দাম বাড়াতে একমত হয়েছেন বলে জানা যায়।

২০২০ সালের সর্বশেষ পাইকারি পর্যায়ে সর্বনিম্ন প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পিডিবির কাছ থেকে পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা থেকে ছয় টাকা ৪৫ পয়সা করে কিনতে হতো। এই দফায় ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দরবৃদ্ধির কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলোর এখন প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে হবে আগের চেয়ে এক টাকা তিন পয়সা থেকে এক টাকা ২৭ পয়সা বেশি দরে। ফলে তাদের ইউনিট প্রতি এই টাকাটা অতিরিক্ত দিতে হবে।

পাইকারি বাজারে বিদ্যুতের দর বৃদ্ধিতে খুচরা বা গ্রাহক পর্যায়ে কি ধরণের প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে ডিপিডিসির পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমরা আগে ৬ টাকা ৪৫ পয়সা প্রতি ইউনিট দরে বিদ্যুৎ কিনতাম। এখন একই বিদ্যুৎ ৩৩ কেবি লাইনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ টাকা ৭২ পয়সা করে। আগের চেয়ে প্রায় এক টাকা ২৭ পয়সা বেশি গুনতে হবে আমাদেরকে।

গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য কেমন হতে পারে জানতে চাইলে ডিপিডিসির এই কর্মকর্তা সরাসরি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।

তবে তিনি বলেন, গ্রাহক পর্যায়েও মূল্য বাড়বে। তবে সেটা কি পরিমাণ বাড়বে হিসাব করা ছাড়া বলা যাচ্ছে না। আমরা হিসাব করে দেখব কি পরিমাণ বাড়ালে আমাদের লোকসান থাকে না। সেটা বিবেচনা করেই বাড়ানো হবে।

বিদ্যুতের পাইকারি পর্যারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কোম্পানিগুলোর বিরোধীতার কথা স্বীকার করেছেন ডেসকোর এক কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, আমরা বলেছি এই মুহূর্তে বিদ্যুতের মূল্য যেন বৃদ্ধি না করা হয়। কারণ পাইকারি বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কেউ গ্রাহকদের কম মূল্যে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে না। এরা প্রতি ইউনিট এক টাকা ২৭ পয়সা বেশি দরে বিক্রি করলে যারা গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করবে তাদের খরচ আরো বেশি। সেই হিসাবে দাম বাড়ালে গ্রাহক পর্যায়ে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ মূল্য বাড়তে পারে।

বিইআরসির পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এম শামসুল আলম।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ নেই। পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানো ঘোষণা দিচ্ছে বিইআরসি। তারা বলছে গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানা হবে না। কিন্তু উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ কিনে বিতরণ কোম্পাণি গ্রাহকদেরকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিতরণ করবে কীভাবে? এটা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা।

এদিকে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে সরকারে নেওয়া সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন সাধারণম মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনা চলছে এ নিয়ে। হামিদুল ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে বিদ্যুতের দাম বাড়ার বিষয়ে লিখেছেন ‘বিষের দাম যেন না বাড়ে। ’

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাফর ইকবাল নামে একজন ব্যাংকার বললেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ার প্রভাব পড়বে সব কিছুর ওপর। প্রথমে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। পরে নিত্যপণ্যের বাজারে পড়বে এর প্রভাব। সাধারণ মানুষের আর বাঁচার কোনো উপায় থাকবে না।

আরবিসি/২১ নভেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category