• বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীর হাটেল এক্সে সাংবাদিকের ওপর হামলা, থানা ঘেরাও

Reporter Name / ৮২ Time View
Update : শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীতে বিতর্কিত ‘হোটেল এক্স’-এ এবার সিনিয়র সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। হোটেলে বিতর্কিত কর্মকান্ডের ছবি তুলতে গিয়ে রাজশাহীতে কর্মরত ইত্তেফাকের সাংবাদিক আনিসুজ্জামান হামলার শিকার হয়েছে। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে হোটেলের ভেতরেই এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে নগরীর রাজপাড়া থানা ঘেরাও করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনরত সাংবাদিকদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় নগরীর রাজপাড়া থানার ওসিকে অপসারনের দাবিতে থানা ঘেরাও করেন সাংবাদিকরা।

সাংবাদিকরা বলেন, হোটেলর হামলার শিকার আনিসুজ্জামান লিখিত অভিযোগ দিলেও থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমার কোনো ভুমিকা না রেখে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়ায় তারা থানা ঘেরাও করেছেন। বিকেল ৪টা থেকে সাংবাদিকরা রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানা ঘেরাও করেন। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও সাংবাদিকরা থানার সামনে রাস্তায় বসেছিলেন। তাঁরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমানকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

এর আগে দুপুরে বিতর্কিক ‘হোটেল এক্স’ নামের একটি আবাসিক হোটেলে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হন দৈনিক ইত্তেফাকের স্টাফ রিপোর্টার আনিসুজ্জামান। বিতর্কিত এই হোটেলে দুটি কোচিং সেন্টার রাজশাহীর সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গিয়ে একটি অনুষ্ঠান করছিল। সম্প্রতি এই হোটেলে ডিজে পার্টির নামে অশ্লীল নৃত্যের দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এই বিতর্কিত আবাসিক হোটেলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের কেন নেওয়া হয়েছে সে ব্যাপারে একজন অভিভাবক সাংবাদিক আনিসুজ্জামানকে ফোন করে জানালে তিনি তা দেখতে গিয়েছিলেন।

হামলার শিকার সাংবাদিক আনিসুজ্জামান জানান, হোটেলের দোতলায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে নাচগানের অনুষ্ঠান চলছিলো। এর একটি ছবি তুলে তিনি বের হচ্ছিলেন। এসময় হোটেলের কর্মীরা তাকে আটকে রাখে। শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন করে তার ফোন থেকে ছবি ডিলিট করার চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ রিপনসহ কয়েকজন সাংবাদিক। তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকা সাংবাদিক আনিসুজ্জামানকে পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্ধার করে হোটেল থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন হোটেলের কর্মীরা আবারও পুলিশের সামনেই সাংবাদিক আনিসুজ্জামানকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করে। পুলিশ তখন নির্বিকার ছিল। এ সময় ওই এলাকার এক সন্ত্রাসীকে হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রকাশ্যেই হত্যার হুমকি দেয়। পুলিশের সামনেই ফোন করে অন্য সন্ত্রাসীদের অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে ডাকতেও দেখা যায় ওই সন্ত্রাসীকে।

এ সময় সাংবাদিকরা হোটেলের এক্সের সামনে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্তদের আটকের দাবি জানালে পুলিশ দুজনকে থানায় নেয়। কিন্তু থানায় নেওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নিতে গড়িমশি করা এবং উল্টো হোটেল এক্সের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান। পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল আরিফের সামনেই ওসি সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে ঔর্দ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এর প্রতিবাদে সাংবাদিকরা থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সাংবাদিকরা অভিযোগ তোলেন, ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান হোটেল এক্স থেকে অবৈধ সুবিধা নেন বলে ওই হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। তিনি শুক্রবারের এই ঘটনার পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ একটি থানায় থাকার যোগ্য নন। তিনি যোগ দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেদিনই এই ওসিকে প্রত্যাহার করা উচিত ছিল।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, সাংবাদিকদের থানা ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচির কথা তিনি জেনেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, হামলাকারীদের গ্রেফতার ও রাজপাড়া থানার ওসির অপসারণ করা না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

 

আরবিসি/১৮ নভেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category