• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

রাবিতে শেষ হলো চিহ্নমেলার পঞ্চম আসর

Reporter Name / ১৬৩ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বাংলার লেখক-পাঠক-সম্পাদকদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হওয়া ‘চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা’ শেষ হয়েছে। এবারের আয়োজনে এসে অভিভূত হয়েছেন এপার বাংলা, ওপার বাংলার সকলেই। এবারের আয়োজনও ছিলো মনকাড়া।

চতুর্দিকে রঙিন কাপড়ের প্যান্ডেলে ঘেরা রাবির শহিদুল্লাহ কলাভবন চত্বর। এখানেই একপাশে শীতলপাটি, কুলো আর শখের হাঁড়ি দিয়ে সজ্জিত বাঙালিয়ানা ধাঁচের ফটক। ফটকের ভেতর দিয়ে ঢুকতেই চতুর্দিকে সারি সারি বইয়ের দোকান। একপাশে বাংলাদেশের বিভিন্ন লেখক-সম্পাদকদের আর অপরপাশে ভারতের কলকাতা, আসাম, ত্রিপুরা, শিলিগুড়িসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত লেখক-সম্পাদকদের বইয়ের দোকান। আর চত্বরের সর্বত্র জুড়ে রঙ বে-রঙয়ের আলোকসজ্জা। এমন আয়োজনে এসে অভিভূত হয়েছেন দুই বাংলার অতিথিরা।

সাহিত্যের টানেই ভারতের বিহার রাজ্যের কিষাণগঞ্জ থেকে চিহ্নমেলায় এসেছেন আষীষ ঘোষ। নিজের সম্পাদনায় প্রকাশিত কিছু ম্যাগজিন নিয়ে মেলাতে ‘সীমান্তের পাতা’ নামে স্টলও দিয়েছেন তিনি। আষীষ ঘোষ বলেন, ভারতবর্ষে যারা সাহিত্য নিয়ে লেখালেখি করে তাদের সকলের সঙ্গী হিসেবে আমি চিহ্নমেলায় এসেছি। এখানে এসে মনে হয়েছে বাঙ্গালী সত্তা থেকে আমরা ভিন্ন নই, আমরা সবাই এক। এপার হই, ওপার হই, পারাপার শুধু কাটাতারে। হৃদয়ে কোনো কাটাতার নেই। আর মেলায় পাঠকদেরও বেশ সাড়া পেয়েছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এই মেলার মাধ্যমে আমাদের পরিচিতিও বাড়ছে।

প্রথমবারের মতো চিহ্নমেলাতে এসে অভিভূত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মধুসূদন চন্দ্র বর্মন। তিনি বলেন, আমি মেলাতে এসে খুবই অভিভূত। আমি ধারনাও করতে পারিনি এই মেলাতে এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লেখকদের পাশাপাশি কলকাতা, দার্জিলিং এবং ত্রিপুরাসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের লেখকদের একসঙ্গে পাবো। পশ্চিমবঙ্গের লেখকরা যে এখনও বাংলাভাষা নিয়ে কাজ করছে এই বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের।

দেশের দিনাজপুর জেলা থেকে নিজ সম্পাদিত ম্যাগাজিন নিয়ে ‘প্রয়াসী’ নামক স্টল দিয়েছেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জলিল আহমেদ। স্টলে থাকা জলিল আহমেদের নাতনি রাবির চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার বলেন, প্রথমবারের মতো এবারে চিহ্নমেলায় বইয়ের স্টলে আছি। স্টলে পাঠকদের বেশ সাড়া পেয়েছি। বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা বাংলা সাহিত্যকে ভালোবেসে মেলায় বইগুলো কিনেছেন, দেখেছেন এটা অত্যন্ত আনন্দের একটা বিষয়। আর চিহ্নমেলার সমগ্র আয়োজনটাও দেখার মতো।

দ্বিতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে মেলায় এসেছেন সুষ্মিতা বাসু সিং। মেলায় বইয়ের স্টল দিয়েছেন ‘ঋতবাক’ নামে। জানতে চাইলে সুষ্মিতা বাসু বলেন, মেলার আয়োজন অত্যন্ত সুন্দর। মেলার আয়োজনকে আমি একশতে, দু’শ দিব। আর রাবি ক্যাম্পাসটাও দৃষ্টিনন্দন। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো এখানের শিক্ষার্থীরা মেলায় আসছেন, বই কিনছেন, আমাদের সঙ্গে গল্প-আড্ডা দিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, এবারে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত চিহ্নমেলার পঞ্চম আসরে দেশ ও দেশের বাইরের দুই শতাধিক লিটলম্যাগ এবং পাঁচ শতাধিক লেখক-পাঠক ও সম্পাদকের সম্মেলন ঘটে। মেলার শুরুরদিন সোমবার বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা, মুক্তভাষণ, গল্প ও কবিতাপাঠ এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং শেষদিনেও বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা, গ্রন্থ ও পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন, প্রবন্ধ পাঠ এবং সন্ধ্যায় বিভিন্ন শ্রেণীতে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে ‘চিহ্ন’ সাহিত্য পত্রিকা লেখক-পাঠক ও সম্পাদকের এই বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা’।

আরবিসি/১৮ অক্টোবর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category