আরবিসি ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতারা সবসময় সরকারের পতন কামনা করেন। কিন্তু শকুনের দোয়ায় যেমন গরু মরে না, তেমনই বিএনপির দোয়ায়ও সরকারের পতন হবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার পদত্যাগের যে অলীক স্বপ্ন বিএনপি নেতারা দেখছেন এবং তাদের কর্মীদের দেখাচ্ছেন—তা বাস্তবে কখনও ঘটবে না। ক্ষমতা দেওয়ার মালিক আল্লাহ এবং ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ। জনগণ যতদিন চাইবে শেখ হাসিনার সরকার ততদিন ক্ষমতায় থাকবে। বিএনপি নেতাদের কথায় সরকারের পতন হবে না।’
অপরিণামদর্শী বিএনপি নেতারা বৈশ্বিক সংকটের বাস্তবতা অনুধাবন না করেই জনগণের কষ্টকে পুঁজি করে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘ভিত্তিহীন, আজগুবি ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের’ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট সংকট বিশ্বব্যাপী। বিশ্বের সব দেশই এই সংকট মোকাবিলা করছে এবং আগামীতে এই সংকট গভীরতর হলে তা কীভাবে মোকাবিলা করবে, তার দিশা খুঁজছে। বিএনপি মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন—বিশ্বের সব দেশের প্রধানমন্ত্রীই কি তাহলে পদত্যাগ করবেন? বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়। বিশ্বব্যাপী এই সংকট আমাদের সৃষ্ট না হলেও তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরে পড়েছে। আগামী বছর থেকে বিশ্বমন্দার আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী বলেই আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছেন এবং বেশি বেশি খাদ্য উৎপাদনের কথা বলেছেন। কিন্তু অপরিণামদর্শী বিএনপি নেতারা বৈশ্বিক সংকটের বাস্তবতা অনুধাবন না করেই গলার জোরে কথা বলছেন এবং জনগণের কষ্টকে পুঁজি করে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, আন্দোলনে পতন হবে এই সরকারের। গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি মহাসচিব তাদের হতাশ নেতাকর্মীদের চাঙা করতে এমনটা বলে আসছেন। সরকার পতনের লক্ষ্যে তারা কখনও শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন, কখনও ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন এবং কখনও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণা করায় নাকি বড় সর্বনাশ হয়েছে। জনগণের বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে নাকি পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব হয়তো জানেন না, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, কোরিয়া ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোগুলো চিহ্নিত করা আছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হচ্ছে—সরকার কর্তৃক ঘোষিত এরূপ কোনো বাহ্যিক বা ভাচুর্য়াল তথ্য পরিকাঠামো, যা কোনো তথ্য-উপাত্ত বা কোনো ইলেকট্রনিক তথ্য নিয়ন্ত্রণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চরণ বা সংরক্ষণ করে এবং যা ক্ষতিগ্রস্ত বা সংকটাপন্ন হলে জননিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বা জনস্বাস্থ্য এবং জাতীয় নিরাপত্তা বা রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বা সার্বভৌমত্বের ওপরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এসব পরিকাঠামোর নিরাপত্তা সামান্য বিঘ্নিত হলে, তা রাষ্ট্র ও জনগণেরই বিপুল ক্ষতির কারণ হবে। এর সঙ্গে জনগণের তথ্যপ্রাপ্তি সংক্রান্ত অধিকার ব্যাঘাত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই বা তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারের সঙ্গে এটা সাংঘর্ষিকও নয়।’
আরবিসি/১৪ অক্টোবর/ রোজি