আরবিসি ডেস্ক : আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কলেবর বাড়ছে। দেশে নবগঠিত দুই প্রশাসনিক বিভাগ-‘পদ্মা’ ও ‘মেঘনা’র জন্য দুটি সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ বাড়ানো হচ্ছে। আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে এ বিষয়ে দলটির গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনা হবে। ডিসেম্বরে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র যুগান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠার সময় ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ (পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিল ৪০। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য করা হয় ৮৩। অর্থাৎ সাত দশকে হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। বর্তমান কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ রয়েছে ৮টি। ২টি বাড়িয়ে তা করা হচ্ছে ১০টি। এর বাইরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ অন্য পদের সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, দলের জাতীয় সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের কাজ চলছে। আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কলেবর বাড়ছে কিনা-জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক বিভাগের জন্য আমাদের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্বে রয়েছেন। তাই নবগঠিত দুই বিভাগের জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় থাকবে।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ শুক্রবার বলেন, ‘আমরা ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ করছি। গঠনতন্ত্র সংশোধন সংক্রান্ত বিষয়ে দলের সভাপতি ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’ তিনি বলেন, নবগঠিত দুই প্রশাসনিক বিভাগের বিষয়টি বিবেচনায় থাকবে।
জানা গেছে, বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির কারণে সমালোচনা তৈরি হওয়ায় আগামীতে কেন্দ্রীয় উপকমিটিগুলো গঠনে আওয়ামী লীগ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবে। দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর পদগুলোর বিপরীতে একটি করে উপকমিটি গঠন করার নিয়ম রয়েছে। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপকমিটির সদস্য সংখ্যা ৪০-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ উপকমিটির সদস্য সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। আবার এসব উপকমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির কারণে তৈরি হয়েছে সমালোচনা।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে গঠনতন্ত্র সংশোধন হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিল ৭৩। সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলটির ৮৩ সদস্যের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে সভাপতি, সভাপতিমণ্ডলীর ১৭ জন সদস্য, সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলীর ৩৪ জন সদস্য (এর মধ্যে রয়েছেন ৪ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৮ জন সাংগঠনিক সম্পাদক), কোষাধ্যক্ষ এবং নির্বাহী সদস্য রয়েছেন ২৮ জন।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা ও মহানগরের প্রতি ২৫ হাজার মানুষের বিপরীতে একজন করে কাউন্সিলর জাতীয় সম্মেলনে যোগ দেন। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত জনশুমারি অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সে হিসাবে এবার জাতীয় সম্মেলনে প্রায় ৬ হাজার ৬০৬ জন কাউন্সিলর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত কাউন্সিলররা দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র সংশোধনে মতামত প্রদান করে থাকেন।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দুটি বিভাগের জন্য একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোয় নতুন দুই বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের একটি পদ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যও বাড়াতে হবে একজন। এই তিন পদের সঙ্গে সমানুপাতিক হারে অন্য পদের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।
আরবিসি/০৯ অক্টোবর/ রোজি