স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা গত বুধবার রাতে শেষ হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে। তবে কোন ধরনের অপৃতিকর ঘটনা ছাড়াই দুর্গাপুজা ভালো ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দরা।
এ বছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’র বিশেষ তৎপরতায় কোন ধরনের নাশকতা ছাড়া সম্পন্ন হয়েছে শারদীয় দূর্গাপূজা।
পূর্জা শুরু হওয়ার পূবেই আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ও হিন্দু সম্প্রদারের নেতৃবৃন্দরা কয়েক দফায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলে উৎসব মূখর পরিবেশে পূর্জা মন্ডপগুলো ছিলো নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা।
প্রতিটি পূর্জা মন্ডপগুলোতে বসানো হয়েছিলো অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা। আর সার্বক্ষণিক পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
আজ বিকেলে আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, তিনি যোগদানের পর শহরের অপরাধ নিয়ন্ত্রনে গঠন করেছিলেন আরএমপি’র সাইবার ইউনিট। আর শহরের প্রতিটি প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে বসিয়েছিলেন সিসি ক্যামেরা। ফলে পুরো শহর সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছিলো।
এছাড়াও তিনি আরএমপি’র ১২টি থানার পূর্জা মন্ডপগুলো পরিদর্শন করেছেন প্রতিনিয়ত। কুশল বিনিময় করেছেন পূর্জা উদযাপন কমিটির লোকজনের সাথে। এ বছর মহানগরীতে মোট ৭৬টি ও জেলায় প্রায় ৪’শটি পূর্জা মন্ডপে পূর্জা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় নদীর ঘাটগুলোতে দেয়া হয়েছিলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি নিজেও প্রতিমা বিসর্জন শুরু হওয়ার পর থেকেই মহানগরীর মুন্নুজান, পঞ্চবটি, আলুপট্টি, ফুদকিপাড়া ও বড়কুঠি ঘাট পরিদর্শন করেন।
শহরের পূর্জা মন্ডপগুলো ঘুরে অপু দাশ নামের এক ব্যাক্তি জানান, এ বছর পূর্জা মন্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে পুলিশ, আনসারসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকার কারণে নির্বিঘ্নে পূর্জা উদযাপন করতে পেরেছেন। এ কারণে বেশ খুশি তিনি।
পূর্জা মন্ডপ ঘরতে আসা অর্পনা দাশ নামের এক নারী জানান, এ বছর তিনি বেশ ভালো ভাবে পূর্জা উদযাপন করতে পেরেছেন। কোন বখাটে ছেলের উৎপাত ছিলোনা মন্ডপগুলোতে। এ জন্য তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
এ ব্যাপারে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি তপন সেন জানান, প্রতিটি পূর্জা মন্ডপে কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সহযোগীতা করা হয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে উৎসব মূখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে শারদীয় দূর্গাপুজা।
এর আগে বিদায়ের কষ্ট ভুলে থাকতে এবং দেবীকে হাসিমুখে বিদায় জানানোর জন্য বিজয়া দশমীতে ভক্তরা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। দেবীকে বিদায় জানাতে তাই বিজয়া দশমীর সকাল থেকেই চলে দশমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা।
রাজশাহী মহানগরীর আলুপট্টিতে মণ্ডপে মণ্ডপে ধূপ জালিয়ে ও পূজার বিভিন্ন সামগ্রী সামনে রেখে দশমী পূজা পরিচালনা করেন মন্দিরের পুরোহিত।
এরপর একে একে সব মণ্ডপ থেকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হবে পদ্মার নদীর ঘাটে। সকল আনুষ্ঠানিকতা মেনে বিসর্জন দেয়া হবে দেবী দূর্গাকে। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার।
আরবিসি/০৬ অক্টোবর/ রোজি