• শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন

ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

Reporter Name / ১৯২ Time View
Update : শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ দলের নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ইসলামাবাদের সিনিয়র সিভিল জজ রানা মুজাহিদ রহিম এই পরোয়ানা জারি করেছেন।

দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডন বলছে, গত ২০ আগস্ট ইসলামাবাদের সমাবেশে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জেবা চৌধুরীকে হুমকি দেওয়ার মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গতকাল (৩০ সেপ্টেম্বর) এই পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে বিষয়টি জানা যায় আজ শনিবার।

এদিকে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর বিবৃতি দিয়েছে ইসলামাবাদ পুলিশ। তারা বলছে, এটা পুরোপুরি আইনি প্রক্রিয়া।

পুলিশ বলছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ইমরান খানের বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মামলা থেকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ বাতিল করার পর মামলাটি দায়রা আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পিটিআই প্রধান সেখান থেকে জামিন নেননি।

ইসলামাবাদ পুলিশের ভাষ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই বিষয়ে আদালতের সর্বশেষ শুনানিতেও উপস্থিত ছিলেন না এবং তার উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সেই সময়ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।

ইমরান খান গত ২০ আগস্টের ভাষণে ইসলামাবাদ পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং উপ-মহাপরিদর্শকের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, আমরা আপনাদের ছাড় দেব না।

গত ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে গ্রেপ্তার হন ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহকারী ও পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা শাহবাজ গিল।

শাহবাজের মুক্তির দাবিতে ব্যাপকভাবে সরব হন পিটিআই চেয়ারম্যান। পরে দলীয় সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ইমরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, যদি অবিলম্বে শাহবাজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও তাকে মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে ইসলামাবাদ পুলিশের আইজি, ডিআইজি ও যে আদালতে শাহবাজের বিচার চলছে, তার বিচারক জেবা চৌধরীকে ‘দেখে নেবেন’ তিনি।

এই বক্তব্য দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ও সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয় ইমরান খানের বিরুদ্ধে। মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে পরের দিন ২২ আগস্ট ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন পিটিআইয়ের দুই আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী ও বাবর আওয়ান। দফায় দফায় পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জামিনও পান। মামলার সর্বশেষ শুনানিতে তাকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন দেয় ইসলামাবাদের আদালত। সেই জামিনের মেয়াদ শেষের দিনেই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবর এলো।

ডন বলছে, ম্যাজিস্ট্রেট আলী জাভেদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামাবাদের মারগাল্লা থানায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এফআইআরে বলা হয়েছে, পিটিআইয়ের সমাবেশে দেওয়া ভাষণে ইমরান খান ইসলামাবাদের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন নারী অতিরিক্ত দায়রা জজকে ভীতি প্রদর্শন এবং হুমকি দিয়েছেন; যাতে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং পিটিআইয়ের নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে না পারেন।

আলী জাভেদ বলেছেন, আদালতে মামলার শুনানির সময় ম্যাজিস্ট্রেট যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ইমরানের বক্তব্য পুলিশ, বিচারক এবং দেশের মানুষের মাঝে ভয় ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দেশের শান্তি নষ্ট করা হয়েছে। এফআইআরে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অনুরোধ জানানো হয়।

পরবর্তীতে ওই এফআইআরে পাকিস্তানের দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারা (সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্বে পালনে বাধা দেওয়ার অপরাধ), ১৮৮ ধারা (সরকারি কর্মীর যথাযথভাবে জারি করা আদেশ অমান্য), ৫০৪ ধারা (ফৌজদারী ভীতি প্রদর্শন) এবং ৫০৬ ধারা (ফৌজদারী ভীতি প্রদর্শনের শাস্তি) যুক্ত করা হয়।

আরবিসি/০১ অক্টোবর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category