স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের বিতর্কিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অবশেষে মুখ খুলেছেন। সম্প্রতি এক নারী নেত্রীকে ফোন করে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার যে অডিও ফাঁস হয়েছিল, সেটি নিজের নয় বলে দাবি করেছেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির সাকিবুল ইসলাম রানা। আর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি দাবি করছেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে যে পানীয় দেখা গেছে সেটি ফেনসিডিল নয়, বরং সেটি কোমল পানীয় (স্পিড) ছিলো।
রবিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি। এ সময় আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেদের নির্দোষ দাবিও করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা দাবি করেন, তিনি কখনও শিবির বা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাদের নিজ সংগঠনের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই এসব ষড়যন্ত্র করছেন। আর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজীবের দেওয়া বক্তব্যও অসত্য বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া সম্প্রতি ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপটিও তার নয়।
রানার কথা শেষ হলে কাটাখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামার ব্যক্তিগত চেম্বারে থাকার কথা স্বীকার করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি। তিনি বলেন, সেখানে থাকা অবস্থায় আমি ফেনসিডিল না কোমল পানীয় স্পিড পান করেছিলাম। এ সময় ফেনসিডিল সেবনের ভিডিওটি সুপার এডিটিং করা বলেও দাবি করেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের মারধরের যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি অস্বীকার করেন অমি। তিনি দাবি করেন, দলের ভেতর থেকেই পরিকল্পিতভাবে তাকে ও তার সভাপতি রানাকে জামায়াত-বিএনপি বানিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাদেরকে সবার সামনে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
তারা জানিয়েছেন, আনিত অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা নিরপেক্ষভাবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করলেই সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সংবাদ সম্মেলনের পর অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানার একটি ফোন কলের কিছু অংশ (৪ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ক্লিপ) ভাইরাল হয়। এতে শোনা যায় তিনি এক নারী নেত্রীকে ‘মেয়ে দেওয়ার’ কথা বলছেন। আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে সব চিটারের দলের সর্দার বলে দাবি করেন রানা। আরেক ভিডিওতে সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমিকে এক নেতার চেম্বারে বসে ফেনসিডিল সেবন করতে দেখা যায়।
এ দুটি ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনার তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
আরবিসি/১৮ সেপ্টেম্বর/ রোজি