• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

তানোরে বাড়ছে ফুল-ফলের বাগান, তালগাছ

Reporter Name / ৩৬০ Time View
Update : সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন প্ররিবেশ ব্যবস্থাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। মাটির ক্ষয়রোধ, অনাবৃষ্টি, বজ্রপাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে তানোর-গোদাগাড়ী আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ২০০৮ সাল থেকে আজ অবদি তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি সভা-সেমিনারে তার বক্তব্যে সবাইকে বেশি বেশি গাছ লাগানোর জন আহবান জানিয়ে আসছিলেন।
তিনি নিজে জন্মস্থান তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের চৌরখৈর গ্রামে নিজ জমিতে বেশ কয়েকটি বাগান তৈরি করেছেন। এর মধ্যে ২১০ বিঘা জমিতে আম বাগান রয়েছে, ৩০ বিঘা জমিতে পিয়ারা বাগান রয়েছে, ৫ বিঘা জমিতে মালটা বাগান রয়েছে, ২ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান রয়েছে, ১৫ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকার মিস্ত্র গাছের বাগান রয়েছে, ৫০ বিঘা জমিতে বনোযোগ গাছ রয়েছে। বাগানের দেখার দায়িত্বে থাকা রশিদুল হাসান বলেন, এমপি সাহেবের বাগান দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসেন।

এমপির বাগান দেখে তানোরে অনেকে নিজ নিজ জমিতে মালটা, ড্রাগন ও পিয়ারার বাগান করেছেন। তানোরের তৃনমূল মানুষরা বৃক্ষ রোপন করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

তানোর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় এক সময় অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আজ তানোরে ফাঁকা কোন জায়না পড়ে নেই বললেই চলে। জমিতে কিছু না কিছু গাছ লাগানো রয়েছে।

এমপির অনুরোধে তানোর এলাকার প্রায় প্রতিটি রাস্তায় তাল গাছ, খেজুর গাছসহ বিভিন্ন রকমের জাতের গাছ লাগানো হয়েছে। আজ সেই গাছগুলো পথোচারীদের সবার নজর কাড়ে। বিশেষ করে বিভিন্ন রাস্তায় সারি সারি তাল গাছগুলো রাস্তার সুন্দরজ্য বাড়িয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে প্রকৃতির রূপ-প্রকৃতি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বজ্রপাতে বেশি আঘাত হানে সাধারণত উঁচু গাছে।

এদিক থেকে তালগাছ বজ্রঝুঁকি কমায়। তানোর উপজেলার পাঁচন্দর আব্দুল মতিন ও বাধাইড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, এমপি মহাদয়ের অনুরোধে আমাদের ইউনিয়নে প্রায় প্রতিটি রাস্তায় আমরা নিজ নিজ উদ্যোগে তাল ও খেজুর গাছের চারা লাগিয়েছি। সেই গাছগুলো বড় হয়েছে। রাস্তার ধারে গাছগুলো দেখতে সুন্দর লাগছে। তানোর পৌর এলাকার আকচা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দীন বলেন, আমাদের স্কুলের এক অনুষ্ঠানে এমপি মহাদয় এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে তিনি তার বক্তব্যে বেশি বেশি গাছ রোপন করতে বলেছিলেন। তার কথা অনুসরন করে আমাদের স্কুলের ফাঁকা জায়গায় তাল গাছসহ বিভিন্ন প্রকার গাছ রোপন করেছি।

অপর দিকে পৌরশহরসহ গ্রাম অঞ্চলে মানুষ সজিনের গাছ লাগাতে ঝুকেছে। প্রখর খরাসঞ্চিত এই গাছে প্রচুর সজিনে ডাঁটা ঝুলে রয়েছে। তানোরে এখন সজিনে ডাঁটা ব্যাণিজিক আকারে চাষ হচ্ছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তানোর বাসিকে সজিনের গাছ লাগানোর জন্য উৎবদ্ধ করে আসছে। কেউ বা জমিতে আবার কেউ বা বাড়ির আশপাশে ফাঁকা জায়গাই। তেমন কোন খরচও লাগেনা। চলতি মৌসুমে গাছগুলোতে ব্যাপক ডাঁটা ধরেছে। এখন তানোর থেকে সজিনের ডাঁটা জেলা শহরগুলো ছাড়িয়ে দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হচ্ছে। তানোর পৌর এলাকার গোল্লাপাড়া গ্রামের সুফিয়া বেগম বলেন, সজিনের গাছ লাগাতে কোন খরচ লাগেনা। ডাল পুতে দিলেই হয়ে যায়। গাছগুলো একটু পরির্চজা করলেই চলে। বাড়ি পাশে ফাঁকা জায়গাই আমি একাধিক সজিনের গাছ লাগিয়েছি। এবছর অনেক ডাঁটা ধরেছে। বাজারে ডাঁটা বিক্রি করে অনেক আয় হয়েছে।

কলমা গ্রামের তইবুর রহমান বলেন, এমপির কথা শুনে আমাদের এলাকায় অনেকে সজিনের গাছ লাগিয়েছি। আজ তাঁর সুফল ভোগ করছি। খরচ নেই বললেই চলে, বিনা খরচে অর্থ আয় হচ্ছে। তানোর উপজেলায় সজিনের ব্যাপক চাষসহ বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজার দামও ভালো। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে প্রচুর সজিনে ডাঁটা ধরায় স্থানীয় হাট বাজারে প্রচুর আমদানী হচ্ছে। মুখরোচক ও পুষ্টিগুনে ভরপুর সজিনে ডাঁটা স্থানীয় গ্রামঅঞ্চলের হাট-বাজার ভরপুর। বর্তমানে বাজের প্রতি কেজি সজিনে ডাঁটা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তানোর উপজেরা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লা আহম্মদ বলেন, তানোরে পিছিয়ে পড়া কৃষকদের এগিয়ে নিতে এমপি মহাদয়ের শক্ত ভূমিকা রয়েছে। তিনি তানোরবাসীকে সব সময় বুঝিয়েছেন, শুধু ধান চাষ করলে হবে না। ধান চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের আবাদ করতে হবে। তিনি শুধু একজন এমপি নয় তিনি একজন কৃষকও।

তিনি নিজে অনেক ধরনের বাগান তৈরি করছেন। তানোর উপজেলার প্রায় বাড়ির আশ-পাশে সজিনের গাছ রয়েছে। কোন খরচ ছাড়াই সজিনের গাছ লাগিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব। তানোরে প্রায় প্রতিটি রাস্তায় তাল গাছসহ বিভিন্ন প্রকার গাছ লাগানো রয়েছে। উপজেলা জুড়ে অসংখো পিয়ারা, মালটা, ড্রাগন ও আমের বাগান রয়েছে।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমার জানা মতে ইতিপূর্বে তানোর উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় হাজার হাজার তালের বীজ রোপন করা হয়েছিল। সেই তাল গাছগুলো আজ বড় হয়েছে। চলার পথে রাস্তার ধারের সারি সারি তাল গাছ দেখে পথচারীদের নজর কাড়ছে।

আর সজিনের ডাটার গাছ তানোরের প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে। সজিনে ডাটা মানুষের পুষ্টির দাহিদা মেটায়। সেই সাথে তৃণমূল মানুষেরা ডাটা বিক্রি করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে।

আরবিসি/২৯ আগস্ট/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category