স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে গ্রামীণ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে নগদ দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে আদালতের নির্দেশে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় কোর্ট পুলিশ।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম রাজু আহম্মেদ (৩৫)। তিনি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিবজাইট গ্রামের সনজেব আলী প্রামাণিকের ছেলে। এছাড়া তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখার কর্মকর্তা ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম বলেন, ২০২১ সালের জুন মাসে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই মামলা দায়ের করেছিলেন ভুক্তভোগী এক গৃহবধূ। ওই মামলায় রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে একটি ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপর ধারায় আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক সাজার মেয়াদ শেষে অন্যটি কার্যকর হবে। এছাড়া গ্রেফতারের পর হাজতবাস মূলে সাজার দিন কারাদণ্ড থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে। আর জরিমানার অর্থ বাদীকে দিতে বলা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম আরও বলেন, মোট নয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেন বিচারক।
এর আগে ২০২১ সালের ৭ জুন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক গৃহবধূ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আইনে রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, তার বাবার বাড়ি ও অভিযুক্ত ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি একই গ্রামে। তবে রাজু গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরির সুবাদে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে থাকেন। মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়িতে আসেন। পরিচিত হওয়ার সুবাদে তার কাছে বিভিন্ন ঘটনা জানতে চান। এ সময় ওই গৃহবধূ রাজুকে জানান তার স্বামী একটি মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন এবং বাবা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু শয্যায়। এ সময় রাজু তাকে আশ্বস্ত করেন যে তার স্বামীকে কারাগার থেকে বের করবেন। এ কথা বলে তার মোবাইল নাম্বার নিয়ে মাঝেমধ্যেই যোগাযোগ করেন। এক দিন তাদের বাড়িতে গিয়ে ওই গৃহবধূর কিছু অসংলগ্ন ছবি রাজু তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেলেন। পরে সেই ছবি দেখিয়ে তাকে ব্লাকমেইল করেন এবং তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরইমধ্যে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান ওই গৃহবধূর স্বামী। এ সময় তাকে আবারও ভয়ভীতি দেখিয়ে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন রাজু। না হলে তার সব নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আইনে মামলা দায়ের করেন।
আরবিসি/০৩ আগস্ট/ রোজি