রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সোমবার ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। পরীক্ষা দিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে নগরীতে এসেছেন ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকরা। এ অবস্থায় রাজশাহী নগরে এখন অতিরিক্ত অন্তত চার লাখ মানুষের অগমন ঘটেছে।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আবাসিক হলগুলোতে আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্রী জিমনেশিয়ামে মহিলা অভিভাবকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় কোটাসহ মোট ৪ হাজার ৬৪১টি আসনের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। ‘এ’ ইউনিটে মোট পরীক্ষার্থী ৬৭ হাজার ২৩৭ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৩৮ হাজার ৬২১ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৭২ হাজার ৪১০ জন। এবার একটি আসনের জন্য লড়বেন ৪৪ জন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী। প্রতিদিন চারটি শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সোমবার ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড, জোহা চত্বর, শহীদ মিনার, সাবাস বাংলাদেশ চত্বর, টুকিটাকি চত্বর ও বুদ্ধিজীবী চত্বর ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বসে কেউ নিচ্ছেন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কেউবা খুঁজে দেখছেন তাদের পরীক্ষার হল। আবার অনেকেই দল বেধে ঘুরে দেখছেন মতিহারের এই সবুজ চত্বর। বিভিন্ন ভাস্কর্যে সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা দিতে এসেছে কৃষ্ণা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যের কথা সবার মুখে শুনেছি। আজ দেখার সৌভাগ্য হল। পরীক্ষা ভাল হয়েছে, বাকিটা স্রষ্টার ইচ্ছা। তবে ক্যাম্পাস ঘুরে মনে হল এমন সুন্দর ক্যাম্পাসে পড়তে না পারলে নিজেকে দুর্ভাগা মনে হবে।
নির্দিষ্ট তারিখের টিকেট না পাওয়ায় পরীক্ষার দু’দিন আগেই ক্যাম্পাসে এসেছেন চট্টগ্রামের পরীক্ষার্থী রাসেল ইসলাম। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসটা সত্যিই অনেক সুন্দর। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখব বলেই মূলত একটু আগেভাগে আসা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ শ্যামল ছায়াবৃত পরিবেশের মধ্যে নৈসর্গিক সৌন্দর্য রয়েছে। ক্যাম্পাসের নান্দনিক স্নিগ্ধতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
মেয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য সিলেট থেকে আসা অভিভাবক আজমল হোসেন বলেন, আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি। এখানে এসে আবাসন সংকটের সম্মুখীন হয়েছি। হোটেলগুলোতে সিট পাইনি। আপাতত এলাকার এক ভাতিজার কাছে আছি। তবে সেখানে থাকতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। এজন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাও যদি বিভাগীয় শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত হতো তাহলে দূরের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হতো।
এদিকে, ভর্তি জালিয়াতি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সব পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।
আরবিসি/২৬ জুলাই/ রোজি