আরবিসি ডেস্ক: দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে সরকার আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ২২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স ইন্ট্রা বিজনেস প্রাইভেট লিমিটেড এই গম সরবরাহ করবে।
সূত্র জানায়, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে আমদানির জন্য ৫ লাখ মেট্রিক টন গমের বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়। সে অনুযায়ী গত ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাজেটে গম আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক গম কেনার জন্য তালিকাভুক্ত ৫৩টি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটেশন আহ্বান করা হয়। মোট ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দলিল কিনলেও ১৪ জুলাই পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এরপর গত ১৭ জুলাই তারিখে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইন্ট্রা বিজনেস প্রাইভেট লিমিটেডের নাম সুপারিশ করে।
সূত্র জানায়, রেসপন্সিভ দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইন্ট্রা বিজনেস প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ৪৭৬.৩৮ ডলার উদ্ধৃত করে। প্রতিষ্ঠানটি অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডা থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। খাদ্য বিভাগ এই ৬টি দেশে গমের বাজার দর সংগ্রহ করে প্রতি মেট্রিক টন গমের গম দাম ৫৩৪.৭২ ডলার নির্ধারণ করে।
সূত্র জানায়, দাপ্তরিক বাজার দর যাচাই কমিটি কর্তৃক ওই ৬ দেশের প্রাক্কলিত দামের সঙ্গে দরপত্রদাতার দরের পার্থক্য পর্যালোচনা, গম আমদানির প্রধান উৎস রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ, ভারত সরকার কর্তৃক গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে গমের বাজারদরের উর্ধ্বগতি, অস্থিরতা এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থকেছে। এর ফলে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির কোটেশনেও একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ভারত ছাড়া বিশ্বের অন্যান গম রপ্তানিকারক দেশের গমের এফওবি দাম এবং জাহাজ ভাড়া বেশি বিবেচনায় দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইন্ট্রা বিজনেস প্রাইভেট লিমিটেডের দেওয়া দর প্রতি মেট্রিক টন ৪৭৬.৩৮ ডলার একক দর হলেও তা যৌক্তিক এবং গ্রহণযোগ্য বলে টিইসি’র সাথে একমত হয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এরপর তিনি প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
সূত্র জানায়, গত ২৪ জুলাই খাদ্যশস্য পরিস্থিতি অনুযায়ী বর্তমান মজুত ১.৫৯ লাখ মেট্রিক টন। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে সরকারি বিতরণ খাতে ৭.২৬ লাখ মেট্রিক টন নিরাপত্তা মজুত হিসেবে ২ লাখ মেট্রিক টনসহ সর্বমোট ৯.২৬ মেট্রিক টন গম প্রয়োজন হবে। এ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার চুক্তি করার অপেক্ষায় রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রতি মেট্রিক টন ৪৭৬.৩৮ মার্কিন ডলার (প্রতি কেজি ৪৪.৭৫৫৯০১ টাকা) হিসেবে ৫০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করতে প্রয়োজন হবে ২ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ লাখ ২৯ হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রতি মার্কিন ডলার ৯৩.৯৫ টাকা হিসেবে ২২৩ কোটি ৭৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
আরবিসি/২৬ জুলাই/ রোজি