স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে কোরবানীর পশু চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন মানুষ। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের এবার চামড়া কেনা নিয়ে অনেকটা অনিহা ছিল শুরু থেকেই। চামড়ার ক্রেতা শূন্যতায় অনেক গ্রামে কোরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেছেন মানুষ।
ঈদেন দিন রাত গড়ালেও ১০০ টাকার উপর দাম বলেনি একজনও ক্রেতা। পরে বাধ্য হয়ে রাতে পানির দরে চামড়া তুলে দিয়েছেন স্থানীয় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে। অনেক গ্রামে বিক্রি না করতে পেরে মাটিতে পুতে ফেলেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। এ চিত্র শুধু গ্রামেই নয়, রাজশাহী মহানগরীসহ জেলা শহর এমন কি পুরো উত্তরবঙ্গে একই অবস্থা।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বছরের তুলনাই চলতি বছর সাত টাকা বেশি করা হলেও এর প্রভার পড়েনি গ্রামে।
মৌসুমী ব্যবসায়ীদের একটি বড় সিন্ডিকেট একজোট হয়ে গ্রামের কোরবানীর পশুর চামড়ার ক্রয় করেছেন পানির দরে। তারা শুরুতেই চামড়া কেনা কৃত্রিম ক্রেতা সংকট তৈরি করে। গ্রামের মানুষেরা চামড়ার ক্রেতা না পাওয়ায় সন্ধ্যা ও অনেকে রাত পর্যন্ত নিয়ে বসে ছিল। পরে সে সিন্ডিকেটের কাছেই গরুর চামড়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ও ছাগলে চামড়া গড়ে ১০ টাকায় বিক্রি করেন।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পাদ অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর গরু-ছাগল, মহিষ ভেড়া সহ ৩ লাখ ৭২ হাজার পশুর চামড়ার হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলায় কোরবানী হয়েছে আরোও কয়েক লাখ পশু।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার পাঁচন্দর গ্রামের একাংশের গ্রাম মাতাব্বর সামসুর রহমান জানান, তার সমাজের এবার ৫টি বড় গরু ও ১৫ টি ছাগল কোরবানী দেয়া হয়েছিল। ঈদের দিন সন্ধ্যা নাগাদ চামড়া কেনার কোন লোক আসেনি। চামগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে এলাকার এক মৌসুমী চাম ব্যবসায়ীর কাছে ফোন করে হাতে পায়ে ধরে চামগুলো তার কাছে পাঠানো হয়। তিনি গরুর চামড়াগুলো ১৫০ ও খাসির ১০ টাকা করে দেন। তাতে ৫টি গরু ও ১৫টি খাসির চামড়া বিক্রি করে মাত্র ৮০০ টাকা পাওয়া গেছে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সগুনা গ্রামের লুৎফর রহমান নামের এক কলেজ শিক্ষক জানান, তার গ্রামের এবার ৮ টি গরু ও ২৭ টি খাসি কোরবানী দেয়া হয়েছে। প্রতিবছর ঈদের নামাজ পড়ার পরই কোরবানীর চামড়া কেনার জন্য একাধিক ব্যবসায়ী হুড়াহুড়ি করে।
চামড়ার ক্রেতা পাওয়া গেলেও দাম নাই বললেই চলে। অবশেষে পরিচিত একজন মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে ১৬০ টাকা করে গরু ও ১০ টাকা করে খাসির চামড়া বিক্রি করা হয়েছে।
আরবিসি/১২ন জুলাই/ রোজি