আরবিসি ডেস্ক : ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য শনিবার (২ জুলাই) দ্বিতীয় দিনেও যথারীতি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। এদিকে, অনলাইনেও টিকিট মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক যাত্রী। ফলে কেউ-কেউ বললেন, স্টেশনেই বাড়িঘর বানিয়ে ফেলেছেন তারা।
জানতে চাইলে নীহার নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, সারাদিন অপেক্ষা করেও টিকিট কিনতে পারেননি তিনি। ফলে আজকেই (শনিবার) আগামীকালের অগ্রিম টিকিটের জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করতে শুরু করেন তিনি। পাশেই খাবার, হাতপাখা নিয়ে বসেছিলেন তিনি। আক্ষেপ করে বললেন, স্টেশনেই বাড়িঘর বানিয়েছি ভাই।
সূত্র জানিয়েছে, শনিবার সকাল ৮টা থেকে যথারীতি বিভিন্ন রুটের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এদিন মূলত ৬ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে এ সময়। বরাবরের মতো এদিনও কাউন্টারের পাশাপাশি অর্ধেক টিকিট অনলাইনে মিলবে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে যাওয়ার টিকিট কেনার জন্য সকালে লাইনে দাঁড়ান তিনি। টিকিট না পেয়ে স্টেশনেই শুরু করেন অপেক্ষা।
তবে, ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে। রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন পলাশ নামের এক ব্যক্তি। পরিবারের জন্য ৩টি অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেন তিনি। তার চোখেমুখে ছিল যুদ্ধজয়ের উচ্ছ্বাস।
অভিযোগ উঠেছে, অনলাইনের টিকিট কালোবাজারি হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী জানান, খোদ স্টেশনের আশেপাশেই গোপনে টিকিট কালোবাজারি করছেন একদল অসাধু ব্যাক্তি। অনলাইনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং পার্টনার সহজ ডটকমের ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা গেছে, কোনো রুটেরই টিকিট নেই।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
এদিকে, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন শনিবার সকাল ১১টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে আসেন। এ সময় যাত্রীদের মালামাল বহনের জন্য ইসলামী ব্যাংকের সৌজন্যে ৫০টি নতুন ট্রলি সরবরাহ উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় মন্ত্রী বলেন, অনলাইনে টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবারের ঈদযাত্রায় অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৬টি স্টেশনে। সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট মিলবে ঢাকা (কমলাপুর) রেলস্টেশনে। রাজশাহী ও খুলনাগামী সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ঢাকা (কমলাপুর) শহরতলী প্ল্যাটফর্মে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ঢাকা বিমানবন্দর রেল স্টেশনের কাউন্টারে।
যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য স্টেশনে অস্থায়ীভাবে রেলওয়ে পুলিশ, ডিএমপি, র্যাবের কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
আরবিসি/০২ জুলাই/ রোজি