স্টাফ রিপোর্টার : মহান জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনা সভায় রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন করা হলে দেশের দারিদ্র বিমোচনসহ বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবে। প্রস্তাবিত এই বাজেট বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে প্রণয়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটের মাধ্যমে জাতির জনকের সকল স্বপ্ন পূরণ হবে বলে রবিবার জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক তাঁর বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন।
বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, তাঁকে বার বার মনোনয়ন দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে এবং তাঁকে নির্বাচিত করায় এলাকার ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। এনামুল হক প্রস্তাবিত এই বাজেটকে দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়া পূরণের বাজেট উল্লেখ করে বলেছেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার দিয়েছিল তা পূরণের লক্ষ্যে যথাযথ কাজ করে চলেছেন। তার প্রতিচ্ছবি রয়েছে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এবং ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশে পরিণত হবে।
জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। সেই সাথে জাতীয় চার নেতাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন। বক্তব্যে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও বাগমারাবাসীকেও ধন্যবাদ জানান। তিনি অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর এদেশের উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যুগোপযোগী। বর্তমান সরকারের সময়ে যে বাজেট বাস্তবায়ন করা হয়েছে তাতে দেশের বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগ, প্রযুক্তি খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এর ফলে মাথাপিচু আয় বেড়েছে, রপ্তানি আয় বেড়েছে, বেড়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যের হারও। সেই সাথে কমেছে দারিদ্রের হার।
রুপকল্প ৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বড় বড় প্রকল্পে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, আশ্রয়ন প্রকল্প ইত্যাদি। সাংসদ এ বাজেট কে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন মুখী বাজেট আখ্যায়িত করে বলেছেন শিক্ষা, যোগাযোগ, প্রযুক্তি, সামাজিক উন্নয়ন, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে বেশি বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন করা হলে দারিদ্র বিমোচন এবং বাংলাদেশের মানুষ মাথা উচু করে বিশ্ব দরবারে দাঁড়াতে পারবে। আমাগী ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন এবং ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মাসেতুর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে বাঙ্গালীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। পদ্মা সেতুর ফলে ২১ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘটবে আমূল পরিবর্তণ।
সাংসদ এনামুল হক তাঁর নির্বাচনী এলাকা বাগমারার কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাগমারার নদী খননের জন্য এরই মধ্যে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। সেজন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি।
সাংসদ এনামুল হক তাঁর নির্বাচনী এলাকার আইন শৃংখলা বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছেন, বাগমারা এক সময় জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত আধুনিক বাগমারায় রূপান্তর হয়েছে। বিগত জোট সরকার এলাকায় বাংলা ভাই বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করেছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখন শান্তির বাগমারায় পরিণত হয়েছে।
সাংসদ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাগমারার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, এ সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারী করা ছাড়াও বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। বাগমারাসহ দেশের সকল নন এমপিওভূক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে দ্রুত এমপিওভূক্ত ও জাতীয়করণ করার দাবি জানিয়েছেন।
সংসদ সদস্য এনামুল হক প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এলাকার উন্নয়নের জন্য আরও বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি হযরত শাহমখমুদ বিমান বন্দরকে আর্ন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দরে উন্নীত এবং কার্গোসার্ভিস চালুর দাবি জানান। এর ফলে এই অঞ্চলের বিভিন্ন পণ্য দেশের বাইরে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেছেন, বিগত অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে একটি স্বতন্ত্র রেলসেতু নির্মাণেরও দাবি জানিয়েছিলেন সেটা আজ বাস্তবায়নের পথে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করায় তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এটা বাস্তবায়ন হলে উত্তো লের লোকজনের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। এটির কাজ শেষ হলে উত্তর বঙ্গে ব্যাপক হারে শিল্পায়ন হবে। সেই সাথে রাজশাহী রেল স্টেশনকে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান এর নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় পাশাপাশি রাজশাহী মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্বদ্যিালয় করার প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও দ্রুত সময়ে মধ্যে রাজশাহীতে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবী জানান তিনি। বাংলাদেশে ৯২ ভাগ মুসলমান লোকের বাস। তাই দেশের সকল মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের বেতন প্রদানের দাবী উত্থাপন করেন। দেশের বেকার জনগোষ্ঠীর জীবনমান বৃদ্ধির জন্য কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে হবে। আগামীতে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
আরবিসি/১৯ জুন/ রোজি