• রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন

রাসিকের ১ হাজার ৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

Reporter Name / ২৯১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৭ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৩২৩ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। আয়-ব্যয় সমান রেখে সুষম বাজেট হলেও এটি গত বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে আকারে ছোট। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজশাহী নগর উন্নয়নের ব্যাপক পরিকল্পনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম মডেল মহানগরী হিসেবে রাজশাহীকে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মেয়র লিটন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নগর ভবনের এ্যানেক্স ভবনে সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন সংবাদ সম্মেলন করে এ বাজেট ঘোষণা করেন। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ১ হাজার ৮০ কোটি ২২ লাখ ৮৯ হাজার ৫৩৬ টাকা। সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছিল ৭৬৯ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪৪ টাকা। গতবারের বাজেট বাস্তবায়নের হার ৭১ শতাংশের বেশি। যা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে প্রথম।
বাজেট ঘোষণাকালে মেয়র লিটন বলেন, সিটি করপোরেশন পরিচালনা ব্যয় যত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই তুলনায় আয় বাড়ছে না। এজন্য এবারের বাজেটে অপ্রচলিত খাতে আয় বৃদ্ধি ও প্রচলিত আয়ের খাতগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তির অধিক ব্যবহারের মাধ্যমে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেট উন্নয়নমুখী জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের বাজেটের ৮০০ কোটি টাকা উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কোনো বর্ধিত কর আরোপ করা হয়নি। বাজেটে শহরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সবুজায়ন, সড়ক ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নাগরিক সেবা সম্প্রসারণ ও সেবার মান উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বাজেটে ডেঙ্গু ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে মশক নিধন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শিশুদের মনোবিকাশে শেখ রাসেল শিশুপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। যা শিগগিরই চালু হবে।
মেয়র লিটন বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বহুতল ভবন নির্মাণ কর আরোপের মাধ্যমে মহানগরে ভবন নির্মাণের আগে সিটি করপোরেশনের কাছে অনুমতি নেওয়ার বিধান কার্যকর করা হবে। ফলে একদিকে যেমন সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয় হবে, অন্যদিকে তেমনি রাজশাহী মহানগরে বহুতল ভবন নির্মাণে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

রাসিক মেয়র বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই নির্বাচিত হয়ে ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করি। এরপর থেকে বর্তমান পরিষদ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং রাজশাহীকে আধুনিক, উন্নত, বাসযোগ্য, পরিচ্ছন্ন ও মডেল মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু করি।
মেয়র লিটন বলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে আমি ও আমার পরিষদ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিসমূহ বাস্তবায়ন এবং রাজশাহীকে সবুজ, পরিচ্ছন্ন, আধুনিক, উন্নত, বাসযোগ্য ও মডেল মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিগত চার বছর নিরলস পরিশ্রম করে রাজশাহী মহানগরীকে পরিবেশবান্ধব ও বাসযোগ্য নগরীরূপে গড়ে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে পরিবেশ পদক প্রদান করে পুরস্কৃত করেছেন। এ গৌরব সমগ্র মহানগরবাসীর। ইতোমধ্যে পদকটি প্রিয় রাজশাহীবাসীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮৬৭ কোটি টাকার রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।

তিনি বলেন, যে মুহুর্তে আমরা উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় রয়েছি এবং অত্যন্ত শক্তহাতে করোনার প্রভাব মোকাবেলা করে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে দারুন এক অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছি। আগামীতে সম্মিলিতভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

মেয়র বলেন, বর্তমানে মহানগরজুড়ে যে পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে, তার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে রাজশাহী মহানগরীকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশবান্ধব, পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য, আধুনিক, কর্মচঞ্চল ও আলো ঝলমলে মহানগরীতে পরিণত করা। যার অনেকটাই বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে আমরা করতে পেরেছি। আগামীতে রাজশাহী মহানগরীকে শুধু বাংলাদেশের মধ্যে নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম মডেল মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই লক্ষ্য অর্জনে রাজশাহীবাসী ও সম্মানিত কাউন্সিলরবৃন্দের সহযোগিতায় ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছি।
মেয়র লিটন বলেন, রাজশাহীকে বদলে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে নির্বাচনী ওয়াদা পুরণে চার বছর কাজ করছি। যা আজ দৃশ্যমান হয়েছে। রাজশাহীর চেহারা প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন ও চলমান উন্নয়ন কাজ শেষ হলে রাজশাহী মহানগরীকে নতুনরূপে দেখতে পাওয়া যাবে। অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্য, শিল্প বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বিনোদনের প্রসারসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজশাহী সিটি গুরুত্ব পাবে।

আরবিসি/১৬ জুন/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category