স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রেমিককে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যেই প্রেমিকাসহ দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে তাদের গ্রেফতারের পর প্রেমিক রশিদুল মন্ডলের (২৪) লাশ উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতার দুই নারীকে হত্যা মামলায় আদালতে চালান দিয়ে তাদের সেচ্ছায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার সায়েরগাছার গ্রামের একরামুল ইসলাম ভাদুর মেয়ে মেরিনা খাতুন (২১) ও ঈশা হকের মেয়ে নেশা খাতুন (২২)। তারা দুইজন বান্ধবী এবং বাসা বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন।
অপরদিকে হত্যাকান্ডের শিকার রাশিদুল মন্ডল নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার পয়লান গ্রামের জহির মন্ডলের ছেলে। রশিদুল পেশায় রাজমিস্ত্রি। দেড় বছরের বেশী সময় ধরে রশিদুল ওই এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে আসছিলো।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম বুধবার দুপুরে সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রথমে মেরিনাকে আটক করে। পরে মেরিনার দেয়া তথ্যমতে বাড়ির ছাদের স্টোর রুম থেকে রশিদুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। এর পর লাশ গুমে সহযোগিতা করায় নিজ বাড়ি থেকে নেশা খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতার দুই আসামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত প্রেমিক রশিদুলের পিতা জহির মন্ডল বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সে মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সেচ্ছায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
পুলিশ জানান, সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে কাজের সুবাদে প্রায় এক বছর আগে মেরিনা খাতুনের সঙ্গে রশিদুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মেরিনা খাতুন বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতো।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বুলবুলের বাড়িতে রশিদুলকে ডেকে নিয়ে যায় মেরিনা। সেখানে মেরিনা রশিদুলকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। রশিদুল পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরে জানাবে বলেন। এ সময় মেরিনা তাকে রাতেই বিয়ে করার জন্য জোর-জবরদোস্তি করে। এক পর্যায়ে রাত ১১ টার দিকে রশিদুল সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে মেরিনা বাঁধা দেয়।
এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে মেরিনা ধাক্কা দিয়ে রশিদুলকে ফেলে দেয়। এর পর শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এরপর বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে উঠার আগেই ভোর রাতে মেরিনা তার বান্ধবী নেশা খাতুনকে ডেকে নিয়ে আসে। এর পর দুইজনে লাশ বাড়ির ছাদের স্টোর রুমে নিয়ে গিয়ে রাখে।
আরবিসি/১৬ জুন/ রোজি