মান্দা প্রতিনিধি: আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় বিবাদমান সম্পত্তির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত। গত ২৫ মে আদালতের সেই আদেশ বাদি ও বিবাদী পক্ষকে পৌঁছে দেন মান্দা থানা পুলিশ। কিন্তু সেই আদেশকে অমান্য করে জোরপূর্বক বসতবাড়ি নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন বিবাদীপক্ষের লোকজন।
এ অবস্থায় গত সোমবার নির্মাণ কাজে বাধা দেন বাদিপক্ষের লোকজন। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের চারজন আহত হন। এদের মধ্যে জালাল মণ্ডলকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও রশিদা বিবিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্য দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মান্দা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামে।
এদিকে মারধরের ঘটনায় রশিদা বিবি বাদি হয়ে জালাল মণ্ডলসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মান্দা থানায় মামলা করেন। অন্যদিকে একই ঘটনায় আহত জালাল মণ্ডলের স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দেন। কিস্তু তার মামলাটি রেকর্ডভূক্ত করা হয়নি। ওসি তাদের বলেছেন ‘সমস্যা আছে, তাই মামলা নিতে পারছি না।’
স্থানীয়রা জানান, বসতভিটার জমি নিয়ে তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামের জালাল মণ্ডলের সঙ্গে প্রতিবেশি রশিদা বিবির দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এনিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়েছে। মান্দা থানা পুলিশও নিষ্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন।
এক পর্যায়ে জালাল মণ্ডল নওগাঁ আদালতে ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় প্রতিপক্ষের রশিদা বিবিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত বিবাদমান সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখাসহ এসিল্যান্ডকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী জালাল মণ্ডল বলেন, গ্রামের কতিপয় লোকজনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রতিপক্ষের রশিদা বিবি তার সম্পত্তি দখলে নিয়ে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। আদালতের ১৪৪ ধারা অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন রশিদা বিবি। বাধা দেওয়ায় গত সোমবার রশিদা বিবি ও তাদের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। এতে আমিসহ আমার স্ত্রী রেজিয়া বিবি ও পুত্রবধূ কামরুন্নাহার আহত হন।’
জালাল মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় মান্দা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের দায়ের করা মামলাটি রেকর্ডভূক্ত করা হয়েছে। এতে আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে বিবাদমান সম্পত্তিতে চারজন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছেন। কিন্তু বাড়িতে রশিদা বিবি কিংবা তার পরিবারের কোনো লোকজনকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিস বৈঠক হলেও তা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। থানা পুলিশও চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মারধরের ঘটনায় দুইপক্ষেরই মামলা নেওয়া উচিত ছিল।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ‘সমস্যা থাকায় জালাল মণ্ডলের মামলা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরবিসি/১৬ জুন/ রোজি