আরবিসি ডেস্ক : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বৃদ্ধ সুরুজ আলী হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তাঁর ছেলে সুজাত মিয়া (২৭)। শনিবার সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে তিনি নিজের বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক শামীম আল মামুন আজ রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সাংসারিক অশান্তি ও হতাশা থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে শায়েস্তা করতে নিজের বাবাকে শ্বাস রোধ করে গলা কেটে হত্যা করেন সুজাত। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে মা, ভাই ও বোনের কাছে ক্ষমা চান।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আসামি সুজাত মিয়ার স্ত্রী এক বছর ধরে সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত। যাওয়ার আগে তাঁর দুই সন্তানকে বাবার বাড়িতে রেখে যান। বিদেশ থেকে তিনি স্বামীর কাছে টাকা না পাঠিয়ে বাবার বাড়িতে টাকা পাঠাতেন। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে স্ত্রীকে তালাক দিতে শ্বশুরবাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হয়। কয়েক দিন আগে সন্তানদের দেখতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুজাত মিয়াকে মারধর করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেন তিনি। হত্যার দায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ওপর চাপানোর চেষ্টা চালান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতের খাওয়া শেষে বৃদ্ধ সুরুজ আলী নিজের ঘরে ছোট ছেলে সুজাত মিয়ার সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে সুজাত মিয়া তাঁর ঘুমন্ত বাবাকে প্রথমে শ্বাস রোধ করে পরে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর পাশের বাড়ির লোকজনদের গিয়ে জানান, একদল ডাকাত তাঁর বাবাকে হত্যা করেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত সুরুজ আলীর মেয়ে খোদেজা বেগম বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গত বুধবার সুজাত মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে, আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল বিকেলে সুজাত হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। সূত্র: প্রথম আলো
আরবিসি/১২ জুন/ রোজি