আরবিসি ডেস্ক : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে এক প্রতিবন্ধী তরুণী (১৮) ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এই ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে অপহরণের পর গর্ভপাত করানোর অভিযোগে খাইরুল ইসলাম (২২) নামে এক যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
অভিযুক্ত খাইরুল উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে।
রোববার বিকেলে ময়মনসিংহ সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজিব আহমেদ তালুকদার এ আদেশ দেন।
আদালতের পুলিশ পরিদর্শক প্রসুন কান্তি দাস জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গৌরীপুর থানা পুলিশ অভিযুক্ত খাইরুল ইসলামকে আদালতে তুললে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে শনিবার (১১ জুন) রাতে ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে মো. খাইরুল ইসলাম, তার মা মদিনা আক্তার এবং চাচা আসাদুজ্জামানসহ মোট চারজনকে আসামি করে গৌরীপুর থানায় মামলা করেন। পরে ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে খাইরুলকে গ্রেফতার করে। অন্য অভিযানে র্যাব-১৪ খাইরুলের চাচা আসাদুজ্জামানকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধার করে প্রধান আসামি খাইরুলকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার সকালে খাইরুলকে আদালতে ও তরুণীতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মামলার নথির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী প্রতিবন্ধী। আনুমানিক সাত থেকে আট মাস আগে খাইরুল তাকে ধর্ষণ করে। সম্প্রতি তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এমতাবস্থায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত ২৭ মে মধ্যরাতে খাইরুল ও সোহেল বাড়িতে ডুকে ভুক্তভোগীসহ তার মাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই তরুণীকে আটকে রেখে তার মাকে ছেড়ে দেয়। পরদিন বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে তরুণীকে না পেয়ে খাইরুলের মা-বাবাকে বিষয়টি জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর থেকে খাইরুল ও তরুণী নিখোঁজ ছিল। এমতাবস্থায় শনিবার (১১ জুন) ওই তরুণীর মা র্যাব-১৪ অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে। পরে র্যাবের পরামর্শে তরুণীর মা গৌরীপুর থানায় মামলা করে।
ওসি আরও বলেন, গ্রেফতার খাইরুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং গত ১ জুন তরুণীকে কোর্ট ম্যারেজ করেছে বলে জানায়।
এ বিষয়ে র্যাব-১৪ এর এএসপি বেলায়েত হোসেন বলেন, গত রাতেই অভিযান চালিয়ে খাইরুলের চাচা আসাদুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, খাইরুল আমাকে ও মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে একদিন আটকে রাখে। পরদিন আমাকে বিয়ে করবে বলে ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করায়। এর পরদিন আমাকে বিয়ে করে।
এ বিষয়ে তরুণীর মা বলেন, আমার মেয়ে কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। এই সুযোগে খাইরুল সাত থেকে আট মাস আগে তাকে ধর্ষণ করে। কিন্তু মেয়ে আমার কাছে কিছু বলেনি। সম্প্রতি তার শারীরিক পরিবর্তন হলে গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে খাইরুল গত মাসের ২৭ তারিখে আমাকেসহ মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গর্ভপাত করায়। এর ১৭ দিন পরে আমার মেয়েকে পুলিশ ও র্যাব উদ্ধার করে। খাইরুলসহ এই ঘটনায় জড়িত সবার শাস্তি চাই।
আরবিসি/১২ জুন/ রোজি