স্টাফ রিপোর্টার : উপজেলার ঝিকরা এলাকায় লীজকৃত পুকুরে প্রতিপক্ষরা বিষ প্রয়োগ করেছে। এতে ওই পুকুর মালিকের প্রায় ষোল লক্ষাধীক টাকার মাছ নিধন হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় বাগমারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এভাবে শত্রুতা মূলক মাছ নিধন করায় এলাকাবাসীর মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহল ও গ্রামবাসী এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তশূলক শান্তির দাবী জানিয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লার ইদ্রিস আলীর পুত্র ডিম ব্যবসায়ী মিঠুন রাজু (২৬) ঝিকরা এলাকার ঝাড়গ্রামের শর্তলী নামক স্থানে একটি পুকুর লীজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। মিঠুন রাজু বাহির এলাকা হতে আসিয়া ঝিকরায় মাছ চাষ করায় তার উপর অন্যায় আচরন ও জোরজবরদস্তি শুরু করে একই এলাকার ইটভাটা দুলালের ম্যানেজার গুনিয়াডাঙ্গা গ্রামের করিমের পুত্র সাইদুল ইসলাম (৩২)।
ওই পুকুরে মাছ চাষকে কেন্দ্র করে সাইদুল শুরু থেকেই রাজুকে হুমকি ধামকি পথরোধ করে ও তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। রাজু শুরু থেকেই ওই্ চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় সাইদুল তার উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সাইদুলের অন্যায় কাজে তার সহযোগি ও ইন্ধনদাতা হিসাবে এগিয়ে আসে ভাটা মালিক দুলাল।
দুলালের আস্কারা পেয়ে সাইদুল রাজুর উপর আরো মারমুখী হয়ে ওঠে এবং ঝিকরা এলাকায় প্রবেশ করলেই সাইদুল তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে রাজুকে অপহরণের হুমকি দেওয়া শুরু করে।
এই ঘটনায় গ্রামবাসী ও পুকুরের পাহারাদার রাজুর পাশে দাঁড়ালে সাইদুল ও তার ক্যাডার বাহিনী তাদেরকেও হুমকি দেয় ও বলে চাঁদা না দিলে এই পুকুরে কাউকে মাছ চাষ করতে দেওয়া হবে না। সেখানে বিষ প্রয়োগ করারও হুমকি দেওয়া হয়। এই্ ঘটনার পর মিঠুন রাজু ওই পুকুরের পাহারাদার গুনিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত শুটুক আলীর পুত্র সাইফুল ইসলাম, ঝাড়গ্রামের মুকবুল হোসেন ও রেজাউল করিমকে পুকুরে পাহারা জোরদার করার কথা বলে চলে আসে। রাজু ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর গত ২৯ মে রবিবার রাত অনুমান ১১টার দিকে সাইদুল তার ক্যাডারবাহিনী নিয়ে পুকুর পাড়ে যায়।
এ সময় পুকুরের পাহারাদার তাদের সরে যেতে বললে তারা পাহারাদারদের মারপিটের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সম্মুখেই পুকুরে মাছ নিধনের ট্যাবলেট প্রয়োগ করে। পরে পাহারাদাররা চিৎকার চেঁচামেচি করলে সাইদুল তার দলবল দিয়ে পুকুর থেকে চলে যায়। ট্যাবলেট প্রয়োগের পর থেকেই পুকুরটিতে একের পর এক মাছ মরে ভেসে উঠতে শুরু করে। পর দিনে সকালে গ্রামবাসী পুকুর পাড়ে ছুটে এসে এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে হতভাগ হয়ে পড়ে। গ্রামবাসী ও পুকরের পাহারাদারা জানান, দুইতিন দিন ধরে পুকুরে মাছ মরে ভেসে ওঠতে শুরু করে। তাদের মতে পুকুরটিতে মাছ মরে প্রায় ষোললক্ষাদীক টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
এই বিষয়ে মাছ চাষী মিঠুন রাজু বলেন, ভাটা মালিক দুলাল আগে ওই পুকুরটিতে মাছ চাষ করত। ভবানীগঞ্জে আমার ফিডের ব্যবসা থাকায় দুলাল আমার কাছে বাকীতে খাদ্য নিতে নিতে প্রায় ত্রিশ লক্ষা টাকা বাকি পড়ে। পরে সে ওই টাকা না দেওয়ার শর্তে আমাকে ওই পুকুরটি চার বছরের জন্য লীজ হিসাবে লিখে দেয়। এই বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার শালিসী বৈঠক হয়।
উপস্থিত ছিলেন, গুনিয়াডাঙ্গার সিদ্দিকুর, ভবানীগঞ্জের আব্দুর রাজ্জাক, আসাদুল সহ আরো অনেকে। এখন দুলাল স্থানীয় হওয়ায় আমার উপর জুলুম নির্যাতন শুরু করে তার ভাটা ম্যানেজর ও তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদা দাবি করে ওঠেপড়ে লেগেছে।
এ বিষয়ে ভাটা মালিক দুলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেই তিনি রিসিভ করেননি। এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার অফিসার ইনচর্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ওই পুকুরের ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আরবিসি/০১ জুন/ রোজি