স্টাফ রিপোর্টার : বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) সহকারি প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আমির হোসাইন বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন আইনের ২০০৪ সালের ২৬ (২) ও ২৭ (১) এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ও ৪ (৩) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। স্পেশাল মামলা নং-৫ তাং-১/৬/২০২২। মামলাটি দায়েরের পরপরই দুদক থেকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তাও হয়েছেন সহকারি পরিচালক আমির হোসাইন।
দুদকের মামলা সূত্রে জানা গেছে, আরডিএর সহকারি প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বিপুল অবৈধ সম্পদের অভিযোগ হলে ২০১৭ সালে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেন। শেখ কামরুজ্জামানকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ হয়। একাধিকবার তাকে দুদক কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শেষে তিনি তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দুদক থেকে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর সত্যতা নিরূপনে গ্রামের বাড়ি কুস্টিয়া ও বর্তমান নিবাস রাজশাহীতে মাঠে পর্যায়ে ব্যাপক অনুসন্ধান পরিচালনা করা হয়।
দুদক সুত্রের মতে, শেখ কামরুজ্জামান আয়ের সঙ্গে অর্জিত সম্পদের ব্যাপক অসামঞ্জষ্য পাওয়া যায়। অনুসন্ধান শেষে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভুত ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৬ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন প্রদান করা হয়। সে মোতাবেক বুধবার দুদক শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
দুদক সুত্রে আরও জানা যায়, দুদকের নোটিশ প্রাপ্তির পর শেখ কামরুজ্জামান তার অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তি গোপন করার লক্ষে তড়িঘড়ি করে মালিকানা স্থানান্তর করেন। সম্পদের প্রকৃতি বদল করেন। একই সঙ্গে উৎস গোপন করার বিভিন্ন চেষ্টা করেন। দুদক আরও জানায়, শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে আরডিএতে ঘুস দিয়ে নিয়োগ লাভ ও চাকরি প্রাপ্তির অভিযোগে আরও একটি দুর্নীতির মামলা রাজশাহীর স্পেশাল জজ আদালতে চলমান আছে।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করে দুদক। এই মামলায় সে উচ্চ আদালতে জামিনে থাকার কথা দাবি করেছেন। যদিও উচ্চ আদালতের আদেশের কোন কপি গত দুই বছরেও তিনি আদালতে দেখাতে পারেননি বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পিপি সুত্রে জানা গেছে।
দুদক সুত্রে আরও জানা যায়, শেখ কামরুজ্জামান বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীর পবা নতুনপাড়া এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করেন। তবে তার কুষ্টিয়া জেলার বারখাদা এলাকায় স্থায়ী নিবাস। বাবার নাম শেখ ছলিম উদ্দিন। অভিযোগে আরও জানা গেছে, শেখ কামরুজ্জামান কুষ্টিয়া এলাকাতেও বিপুল সম্পদ করেছেন। আবার রাজশাহী মহানগরী ও পবা এলাকায় জমি বাড়ি ও পুকুর জলাশয় কিনেছেন। যা তার বর্তমান জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে পুরোপুরি অসঙ্গতিপুর্ণ।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, শেখ কামরুজ্জামান সহকারি প্রকৌশলী হিসেবে আরডিএতে যোগদান করলেও পরবর্তীতে তিনি এষ্টেট অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন।
আরবিসি/০১ জুন/ রোজি