• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের প্রধান শাখায় হাতাহাতি রাজশাহীতে লাঞ্ছিতের পর ১২ ঘন্টা মেসে অবরুদ্ধ ছাত্রীরা, গ্রেপ্তার ৩ গভীর রাতে রাজশাহী সীমান্তে বিএসএফের দফায় দফায় গু’লি বর্ষণ, জনমনে আতঙ্ক রাজশাহীর বাগমারায় তেলের ট্রাক বিস্ফোরণে পুড়লো ৪শ ব্যারেল তেল, ৮ দোকান রাবির ৬ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, ৩৩ জনের নানা মেয়াদে শাস্তি রাজপাড়া থানার নতুন ভবন উদ্বোধন করলেন আরএমপি পুলিশ কমিশনার উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক পাকিস্তানি চিনি, আলুসহ শিল্পের কাঁচামাল নিয়ে এলো সেই জাহাজ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন রাজশাহীর চারঘাটে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫

৩৪ মামলা নিয়ে ৩ বছর পালিয়ে ছিলেন পিকে হালদার

Reporter Name / ১৯৩ Time View
Update : শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : ৩৪টি মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে ছিলেন আলোচিত অর্থ পাচারকারী প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন তিনি। বেশিরভাগ অর্থই পাচার করেছেন কানাডা ও ভারতে।

২০১৯ সালের অক্টোবরে দুদকের তদন্তে অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টি উঠে আসার আগেই পালিয়ে যান পিকে হালদার। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ভারতে শিবশঙ্কর হালদার নামে জালিয়াতি করে নাগরিকত্ব নেওয়ার পরও ধরা পড়েছেন ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট- ইডি’র হাতে।

শনিবার (১৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার স্ত্রী সুস্মিতা ও ভাই প্রীতিশকেও গ্রেফতার করা হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমে পিকে হালদারের গ্রেফতারের বিষয়টি জেনেছি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কিছু জানায়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক আইন ও বন্দি বিনিময় চুক্তির আলোকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো।’

দুদক সূত্র জানায়, পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ৩৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর মধ্যে একটি মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনটি মামলার চার্জশিট অনুমোদনের জন্য কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশনের অনুমোদন নিয়ে দ্রুত এসব চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দিঘিরজান গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত কুমার হালদার বুয়েট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনেস্টেশন (আইবিএ) থেকে এমবিএ করেন। পরে চার্টার্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট (সিএফএ) নামে একটি কোর্স করে আইআইডিএফসি নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগ দেন।

২০০৯ সালে তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরই অর্থ লোপাট শুরু করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পিকে হালদার তার নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও পিপলস লিজিং নামের চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন।

আত্মীয়-স্বজন ও সহযোগীদের মাধ্যমে কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে এসব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণ মঞ্জুর করেন তিনি। এ অর্থের বড় একটি অংশ পাচার করেন কানাডায়।

২০১৪ সালে ছোট ভাই প্রীতেশ কুমার হালদারের সঙ্গে পিএন্ডএল হাল হোল্ডিং ইনক নামে কানাডায় একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ২০১৮ সালে দুই ভাই মিলে ভারতে হাল ট্রিপ টেকনোলজি নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুলে সেখানেও বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেন।

দুদকের কর্মকর্তারা জানান, তারা এখন পর্যন্ত পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের মোট সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। এছাড়া পিকে হালদারসহ তার ৩৮ সহযোগীর ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের শেষের দিকে পিকে হালদারের অর্থ লোপাটের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর ওই বছরেরই ২৩ অক্টোবর দুদকের পক্ষ থেকে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

তবে এর আগেই তিনি দেশ ছেড়ে পালান। তারপর থেকে দুদকের অনুসন্ধানে একের পর এক তার অর্থ কেলেঙ্কারির তথ্য বেরিয়ে আসে।

এখন পর্যন্ত পিকে হালদারের অর্থ পাচার ও লোপাটের সঙ্গে ৮০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। দুদকের দায়ের করা ৩৪টি মামলায় তাদের সবাইকে আসামি করা হয়েছে।

এর মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে দুদক। গ্রেফতার হওয়া ১২ জনের মধ্যে ১১ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

দুদক সূত্র জানায়, পিকে হালদার তার আত্মীয় ও সহকর্মীদের মাধ্যমে পিঅ্যান্ডএল ইন্টারন্যাশনাল, পিঅ্যান্ডএল অ্যাগ্রো, পিঅ্যান্ডএল ভেঞ্চার, পিঅ্যান্ডএল বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, হাল ইন্টারন্যাশনাল, হাল ট্রাভেল, হাল প্রিপ, হাল ক্যাপিটাল, হাল টেকনোলজি, আনন কেমিক্যাল, নর্দান জুট, সুখাদা লিমিটেড, রেপটাইল ফার্ম, সন্দীপ ইন্টারন্যাশনাল, উইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল, বর্ণা, ইমেক্সো, আরবি এন্টারপ্রাইজ, এসএ এন্টারপ্রাইজসহ নানান কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ লোপাট করেছেন।

কাগজে-কলমে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার মা লীলাবতী হালদার, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, স্ত্রী সুস্মিতা সাহা, খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী, অভিজিৎ অধিকারীসহ সাবেক সহকর্মীদের নামমাত্র মালিকানা ছিল।

দুদক সূত্র জানায়, পিকে হালদারের অর্থ পাচারের ঘটনায় খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন প্রভাবশালী কর্মকর্তাও জড়িত রয়েছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এস কে সুর চৌধুরীসহ অন্তত এক ডজন কর্মকর্তাকে দুদক কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।

আরবিসি/১৪ মে/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category