আরবিসি ডেস্ক: কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ ওঠার পর ময়মনসিংহে কিশোরী ফুটলারকে ধর্ষণচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহিদ হাসানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে প্রত্যাহার করা হয় বলে গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান।
জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলের এক কিশোরী ফুটলারকে গত শুক্রবার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে জেলার নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ফকিরের বিরুদ্ধে। পরদিন শনিবার কিশোরী থানায় ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ দিলেও পুলিশ ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা নথিবদ্ধ করে। তবে এর জন্য থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না হয়নি। সেখানে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা কী অবহেলা করেছেন তা পরিষ্কার করেনি পুলিশ।
জেলার পুলিশ সুপার আহমার উজ জামান বলেন, “দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠার কারণেই তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহিদ হাসানকে প্রত্যাহার করা হেয়ছে। আর ওসির বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ওসি দোষী হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কিশোরী ফুটবলার নান্দাইলের শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের ছাত্রী।
তার অভিযোগ, ফয়সাল তার গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ করেন। আরও দুইজন ধর্ষণে সহযোগিতা করে। থানায় ‘ধর্ষণের’ অভিযোগই দেন তিনি। কিন্তু পুলিশ ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা নথিবদ্ধ করলে তার সমালোচনা হয়। মামলার প্রধান আসামি ফয়সালকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে পাঠান জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম রাজিব হাসান।
একই দিনে ধর্ষণ নাকি ধর্ষণচেষ্টা তা নিশ্চিত হতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য কিশোরীকেও হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিশোরী বলেন, সম্প্রতি ফয়সালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ফয়সালের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। কিশোরী কলেজে যাওয়া-আসার সময় ফয়সাল তার খোঁজখবর নিতেন।
“শুক্রবার উপবৃত্তির ফাইলে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা বলে ফয়সাল আমাকে কলেজে ডেকে নেন। কলেজে গেলে ফয়সাল আমাকে মুখ চেপে গলায় চাকু ধরে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও করে রাখেন। এতে সহযোগিতা করেন তার সহযোগী আলামিন ও অজ্ঞাত আরও একজন। মাটিতে ফেলে আলামিন আমার পা ধরে রাখে। ঘটনা কাউকে বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন ফয়সাল। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আমার পরিবার।”
বাড়ি ফিরে সবাইকে বলার পর কিশোরী পুলিশে অভিযোগ দিতে যান। কিশোরীর বক্তব্য, “ওসি স্যারকে সবকিছু খুলে বলার পর তারা ‘ধর্ষণ’ মামলার বদলে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা নিয়েছে। পুলিশ আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছে। তারা এটা কেন করেছে বুঝতে পারছি না” “।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো.আহমার উজ্জামান বলেন, গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি তদন্ত চলছে। ভিকটিমের ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত পেলে সেই অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
আরবিসি/২৯ এপ্রিল/ রোজি