• সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন

নারী ফুটবলারকে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

Reporter Name / ১২৩ Time View
Update : বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : : ময়মনসিংহের নান্দাইলে নারী ফুটবলারকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. ফয়সাল ফকিরের (৩৬) বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল ফকিরকে গাজিপুরের টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তিনি পৌর শহরের পাছপাড়া গ্রামের লাল মিয়া ফকিরের ছেলে। তবে ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ, ‘আমরা ধর্ষণের অভিযোগ দিলেও ওসি ‘ধর্ষণচেষ্টার’ অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। ’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান বলেন, ভিকটিম যদি ধর্ষণের অভিযোগ করে থাকেন। আর সেই অভিযোগের পর যদি ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা হয়। তাহলে তদন্ত করে ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে পৌর শহরের নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পেছনে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরদিন ২৩ এপ্রিল ওই নারী ফুটবলার নিজে বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন থানায়।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, আমি ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ করলেও পুলিশ রহস্যজনক কারণে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা রজু করে।

তবে নান্দাইল থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই থানায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়েছে এবং আসামি ফয়সাল ফকিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমের কথা মতোই মামলা করা হয়েছে, কোনো ব্যতিক্রম হয়নি।

ভুক্তভোগী ওই নারী ফুটবলার সাংবাদিকদের জানান, ‘ফয়সাল পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় আগে থেকেই আমরা পরিচিত। ঘটনার দিন সকালে ফয়সাল ফোন করে বলেন, উপবৃত্তির ফরমে স্বাক্ষর দিতে হবে, এজন্য তাড়াতাড়ি নান্দাইলের শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে যেতে। এমন কথা শুনে সরল বিশ্বাসে আমি কলেজের গেটে গিয়ে তাকে ফোন করি। ফোন করলে আমাকে কলেজের পেছনে যেতে বলে। আমি কলেজের পেছনে যেতেই মুখ চেপে ধরেন ফয়সাল। তখন চিৎকার করলে আশপাশে দুই তিনজন মানুষ আসতে চাইলে ফয়সাল তাদের চাকু দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিলে তারা পালিয়ে যান। একপর্যায়ে কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম আমার চিৎকার শুনে কাছে আসতে চাইলে তাকেও চাকু দেখিয়ে ভয় দেখালে তিনিও চলে যান। পরে ফয়সাল ও তার দুই সঙ্গী আমাকে কলেজের পুরাতন বিল্ডিংয়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। তখন তার সঙ্গীরা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনার পর আমি চলে যেতে চাইলে ফয়সাল হুমকি দিয়ে জানায় ‘কাউকে এ ঘটনা জানালে ধর্ষণের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ’

পরে বাড়িতে ফিরে মা-বাবাকে বিষয়টি জানিয়ে গত ২৩ এপ্রিল সকালে আমি থানায় গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করি। কিন্তু ঘটনার চারদিন পেরিয়ে গেলেও ওসি সাহেব মামলার কোনো কপি দেয়নি এবং অভিযোগে কোনো প্রকার তদন্ত করেনি। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ওই দিন শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় কলেজে আমার ডিউটি ছিল না। তবে আমি গরুর ঘাস কাটতে এসে কলেজের পেছনে চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি ফয়সাল ওই মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করছে। এ সময় আমি এগিয়ে যেতে চাইলে ফয়সাল আমাকে চাকু দেখিয়ে হুমকি দিলে ভয়ে আমি চলে যাই।

এ সময় আমার মোবাইলে টাকা না থাকায় কলেজের বাইরে গিয়ে টাকা লোড দেই। পরে অধ্যক্ষ বাদল কুমার দত্ত স্যারকে বিষয়টি জানাই।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন সরকারি শহীদ আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ বাদল কুমার দত্ত। তিনি বলেন, বিষয়টি পিয়ন আব্দুর রহিম ওই দিনই আমাকে ফোন করে জানায়। তবে ঘটনাটি আমি কাউকে বলিনি।

প্রসঙ্গত, ভিকটিম নারী ফুটবলার জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ২০১৭ রানার আপ ও ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়াও বিপিএল লীগে আনোয়ারা স্পোটিং ক্লাব, ময়মনসিংহ কাচিঝুলি স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলা করে আসছেন। তার কৃতিত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসানের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ও রূপার মেডেল গ্রহণ করেন। এছাড়াও অসংখ্য সার্টিফিকেট ও মেডেল জিতেছেন ওই নারী ফুটবলার।

আরবিসি/২৭ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category