• শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

সিরাজগঞ্জে প্রতিদিন ৫০০ মণ সলপের ঘোল-মাঠা বিক্রি

Reporter Name / ১৭৪ Time View
Update : শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলপের ঘোল ও মাঠার সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। শতবছরের ঐতিহ্য এখানকার ঘোল ও মাঠা কিনতে প্রতিদিন দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারা। সারা বছরই বিক্রি ভালো চললেও রমজানকে কেন্দ্র করে তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

ভোর থেকেই কারিগররা ব্যস্ত হয়ে ওঠে ঘোল ও মাঠা বানানোর কাজে। ভোর হতেই জেলার বিভিন্ন এলাকার খামার থেকে সংগ্রহ করে আনা গরুর খাঁটি দুধ ঢালা হয় বড় বড় পাত্রে। সেই দুধ প্রথমে বিশেষভাবে তৈরি মাটির বড় বড় চুলায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা জ্বালানো হয়। সলপ রেলস্টেশনের পাশে গড়ে ওঠা প্রতিটি ঘোলের দোকানে এখন চোখে পড়বে সারি সারি মাটির চুলায় দুধ জ্বালানোর এমন দৃশ্য।

সলপের মালেক খান ঘোলের দোকানের কারিগর মতিন জানান, চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা দুধ জ্বালানোর একপর্যায়ে সেই দুধগুলো লাল ও ঘন হয়ে আসলে বড় বড় পাতিলে করে সারারাত রেখে দেওয়া হয় জমাট বাঁধার জন্য। পরদিন সেই জমাট বাঁধা দুধ চিনি আর প্রয়োজনীয় উপাদান মিশিয়ে মেশিনে দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু ঘোল।

‘মাঠা তৈরি করা হয় পুরনো নিয়মে। জমাট বাঁধা দুধ বড় বড় পাতিলে রেখে বিশেষভাবে তৈরি বাঁশের হাতলের সঙ্গে রশি দিয়ে আমরা কয়েক ঘণ্টা টেনে টেনে তৈরি করি মাঠা।’

তিনি আরও জানান, দিনব্যাপী চলে বিক্রি। স্বাদ আর গুণগতমানে ভালো হওয়ায় এখানকার ঘোল ও মাঠার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর রোজায় তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

রাজশাহীর বাঘা থেকে ঘোল কিনতে আসা হাকিম আলী জানান, তীব্র গরমে সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের সময় সবাই একটু ঠান্ডা কিছু খেতে চায়। তাই পরিবারের সকলের জন্য ২০ লিটার ঘোল আর ৫ লিটার মাঠা কিনলাম। এ ছাড়া সারাদিনই এখানে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাসহ প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা সলপের এই ঘোল ও মাঠা কিনতে আসেন।

বংশ পরম্পরায় ঘোল ও মাঠা ব্যবসায়ী আবদুল মালেক জানান, তার দাদা মরহুম সাদেক আলী খান ১৯২২ সালে প্রথম সলপ রেলস্টেশনের পাশে ঘোল তৈরির ব্যবসা শুরু করেন। তখন থেকেই এখানকার ঘোল ও মাঠার সুনাম ছড়িয়ে পরে দেশ বিদেশে। পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ও সুনাম ধরে রাখতে স্বাদ ও গুণগতমান ঠিক রেখে এখনো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় অনেকেরই কর্মসংস্থান হয়েছে বলেও জানান এই মাঠা ও ঘোল ব্যবসায়ী।

সলপে প্রতি লিটার ঘোল পাইকারি ৫০ ও খুচরা ৬০ টাকা আর মাঠা পাইকারি ৭০ ও খুচরা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মণ ঘোল ও মাঠা বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আরবিসি/২৩ এপ্রিল/মানিক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category