মানিক হোসেন: রাজশাহীর বাজারে সপ্তাহে ভেদে বেড়েছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম। তবে কয়েকটি সবজির দাম বাড়লেও বেশির ভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে নগরীর সাহেব বাজারের দোকানগুলোতে দেখা গেছে, হাতে গোনা কয়েকটি ভোজ্যতেলের বোতল। বাজারে খোলা তেল থাকলেও বোতলের তেল খুব একটা দেখা যায়নি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ৬ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, অনেক ব্যবসায়ীরা লাভের আশায় বোতলের তেল খুলে বিক্রি করছেন। বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট না থাকলেও দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে সিন্ডিকেটের কারসাজি আছে বলে মনে করছেন ।
খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটার প্রতি ১৬৬ থেকে ১৭০ টাকা দরে। আর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৮২ থেকে ১৮৫ টাকা দরে। খোলা তেল গত সপ্তাহে লিটারে ১৬০ টাকা ও কেজিতে ১৮০ থেকে ১৮২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ভোজ্যতেলের পাশাপাশি বেড়েছে চিনির দামও। গত সপ্তাহে চিনি ৭৮ টাকা থেকে ৮৪ টাকা (দেশি চিনি) কেজি বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে ২ টাকা বেড়েছে।
ইদে চাউলের বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতি বস্তা চাউলের দাম ১০০ টাকা কমেছে বলে জানান এ.পি. চাউল ভান্ডারের সত্ত্বাধিকার প্রকাশ প্রসাদ। মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, আঠাশ ৫২ থেকে ৫৬ টাকা, জিরাশাল ৬০ টাকা, বাশমতি ৭৫ টাকা, নাজিরশাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, শরনা চাউল ৪৮ টাকা, আতব ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচাবাজারগুলোতে কেনাকাটায় অনেকটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন বলে জানান ক্রেতারা। ক্রেতা তাসপিয়া জানান, সবজি কিনতে এসেছেন। গত সপ্তাহে পটলের দাম ৪০ টাকা কেজি ছিল । এ সপ্তাহে ২০ টাকা বেড়েছে। বেগুনের দামও ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যেগুলোর দাম কম আছে সেগুলো কিনছেন বলে জানান।
এছাড়া পেঁয়াজ ২৫ টাকা, আলু ১৬ থেকে ২০ টাকা, আদা ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, রসুন ৬০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, মরিচ ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, শশা ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, করলা ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ঢেড়শ ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা, বরবটি, সজনে ৬০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা, লাউ ৩৫ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মুরগির ও হাঁসের মাংসের কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা দাম বাড়ায় মাংসের বাজারে ক্রেতাদের আপত্তি থাকছে। গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, ছাগলের মাংস ৫০ টাকা বেড়ে ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া সোনালী ২৬০ টাকা, সাদা লেয়ার ২২০ টাকা, দেশি মুরগি, রাজহাঁস, চিনা হাঁস ৪৫০ টাকা এবং পাতিহাঁস ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে প্রতি হালিতে সাদা ডিম ২৬ টাকা, লাল ডিম ৩০ টাকা, হাঁসের ডিম ৩২ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৫০ টাকা, কয়েল পাখির ডিম ১০ টাকা করে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে সাহেব বাজারের মাছের ব্যবসায়ী নুরল ইসলাম জানান, ক্রেতাদের চাহিদা ও মাছের আমদানি কম থাকায় দাম বাড়তি। মাছের বাজারে বড় চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, কাতলা ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, ফলি ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, বড় জিওল ৪০০ টাকা, বড় শোল ৬০০ টাকা, ছোট শোল ৩০০ টাকা, ছোট কৈ ৩৫০ টাকা, বড় কৈ ৫০০ টাকা, ময়া ৩৫০ টাকা, আইড় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা, বড় ইলিশ ১ হাজার ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
আরবিসি/২৩ এপ্রিল/মানিক