আরবিসি ডেস্ক : মধ্যযুগ নারীদের জন্য ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার যুগ। সে সময় অমানবিকভাবে নারীদের ওপর অত্যাচার চলত। যদিও যুগে যুগে অত্যাচার চলে এসেছে, তবে মধ্যযুগের পরিমাণটা ছিল সহ্যের সীমার বাইরে। এই সময়টায় অনেক শাস্তি দেওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়েছিল, যেগুলো শুধু নারীদের ওপরেই প্রয়োগ করা হতো। এর মধ্যে একটি ছিল হাতবন্ধনী।
এটি ছিল মধ্যযুগের নারীদের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সাধারণভাবে ব্যবহৃত নির্যাতনের যন্ত্রগুলোর মধ্যে একটি। যেসব নারীকে ব্যভিচারিণী হিসেবে সন্দেহ করা হতো, তাকে নির্যাতনের জন্য এই বিশেষ সরঞ্জামে আঙুল রাখতে বাধ্য করা হতো। এই যন্ত্রটি শাস্তিপ্রাপ্ত নারীর আঙুলের ডগা প্রচণ্ড জোরে চেপে ধরত। অনেকে যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে অজ্ঞান হয়ে যেত। অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ঠান্ডা পানি নিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হতো, যেন সে কষ্ট অনুভব করে।
ব্যভিচারে দোষী কিংবা রাজাদের আদেশ অমান্য করা নারীদের চাবুক দিয়ে পেটানো হতো। নারীদের উলঙ্গ করে গরুর মাংসের টেন্ডন দিয়ে তৈরি চাবুক দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করা হতো। এই চাবুকটি দেখতে ছোট হলেও প্রচণ্ড জোরে আঘাত করত এবং যেখানে আঘাত করত সেখানে সারাজীবনের জন্য দাগ থেকে যেত। ব্যভিচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়া নারীদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল কাঠের ঘোড়া।
অভিযুক্ত নারীর কাঠের ঘোড়ার সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে রাখা হতো। এই কাঠের ঘোড়াটির মাঝখানে একটি রুক্ষ কাঠের অংশ থাকত, এই কাঠের টুকরাটি চাকার খাদের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এবং এর চারপাশে কয়েকটি লোহার পেরেক ছিল। বেশিরভাগ নারীই এই নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করত।
যেসব নারী অবৈধ সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হতো সেসব নারীদের ওপর অত্যাচার করার জন্য একটি যন্ত্র তৈরি করা হয়েছিল। সেই যন্ত্রটি ধারালো দানাদার বস্তু দ্বারা ডিজাইন করা এবং এটিকে উত্তপ্ত করে নারীর বক্ষযুগল বিভক্ত বা কেটে ফেলা হত। কুমারী নারীরের অত্যাচার করার জন্য ভার্জির চেম্বার নামে একটি যন্ত্রও তৈরি করা হয়েছিল। ভিতরের অংশটি ছিল একটি ছোট চেম্বারের মতো খালি।
সামনে একটি ঢাকনা ছিল এবং ভেতরের মুখ কাঁটা দিয়ে আবৃত ছিল। চেম্বারে ১ জনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা ছিল। যখন বন্দিরা প্রবেশ করত তখন তারা নড়াচড়া করতে পারত না কারণ কাঁটা শরীরে ক্রমাগত আঘাত করত। স্পেনে মধ্যযুগে, ধর্মদ্রোহী আদালত প্রায়ই একটি সূক্ষ্ম, পিরামিড-আকৃতির হাতিয়ার ব্যবহার করত নারীদের নির্যাতন করার জন্য। বিশেষত তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে।
আরবিসি/২৩ এপ্রিল/মানিক