• সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা

Reporter Name / ১০৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : করোনা মহামারির জেরে এমনিতেই বিশ্বজুড়ে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যদি চলতে থাকে, সেক্ষেত্রে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি পুরো বিশ্বে মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বিবিসির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ফাইসাল ইসলামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আশঙ্কা জানিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ঋণদাতা সংস্থার প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর মার্চে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য, ভোজ্য তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও চিনির দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যা গত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড।’

‘খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ অবশ্য দুই বছরের কোভিড মহামারি, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নয়। মহামারির কারণে এই সংকট শুরু হয়েছিল, তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এই যুদ্ধ।’

‘এবং এই যুদ্ধ যদি চলতে থাকে, সেক্ষেত্রে তার প্রভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও অব্যাহত থাকবে এবং আমাদের হিসেব অনুযায়ী, এই বৃদ্ধির হার দ্রুত ১৩ শতাংশ থেকে ৩৭ শতাংশে পৌঁছাবে।’

‘আর এতে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দরিদ্র লোকজন, যাদের দৈনন্দিন খাদ্য জোগাড়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয় এবং খাদ্য কেনার পর হাতে প্রায় কোনো সঞ্চয় থাকে না।’

খাদ্যপণ্যের মূল্যে উল্লম্ফণ ঘটলে দেশে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হওয়ার সমূহ শঙ্কা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে তিনি বলেন,‘একদিকে বিপুল সংখ্যক মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে, অন্যদিকে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের অনেক দেশের সরকার।’

‘অর্থাৎ এমন একটা সংকটের কারণে তাদেরকে দোষারোপ করা হবে, যার জন্য তারা সরাসরি দায়ী নন।’

অবশ্য আসন্ন এই বিপর্যয় থেকে এখনও রক্ষা পাওয়ার উপায় আছে বলে জানিয়েছেন ডেভিড ম্যালপাস। তবে সে জন্য দ্রুত সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

বিবিসিকে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য রয়েছে, তা এই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের ক্ষুধা নিবারণের জন্য যথেষ্ট। ইতিহাসের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে বিশ্বে খাদ্য মজুতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।’

‘বিভিন্ন দেশের সরকার জনভোগান্তি ঠেকাতে খাদ্যপণ্যের মূল্যে ভর্তুকি দিচ্ছে। আমি মনে করি, এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। ভর্তুকি দিয়ে কোনো সমাধান আসবে না, বরং সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করা হবে।’

‘তার পরিবর্তে যদি এসব সরকার সরবরাহ বৃদ্ধি করে এবং দরিদ্র লোকজনের ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারা নিশ্চিত করতে, দেশের বিপণন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনে— তাহলে আসন্ন এই বিপর্যয় অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।’

আরবিসি/২১ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category