আরবিসি ডেস্ক : নাটোর শহরের হেমাঙ্গিনী ব্রীজ এলাকা থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে শাকিল খান (২০) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। পূর্ব বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নাটোর জেলার শাখার নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মী লিটন, জুয়েল, রানা ও সাদিকের নেতৃত্বে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী তাকে মারধরসহ হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বুধবার (২০ এপ্রিল) রাত ৮টায় শহরের সদর হাসপাতাল সড়কের হেমাঙ্গিনী ব্রীজ সংলগ্ন সততা স্পেশালাইড ডায়াগনাস্টিক সেন্টারের দ্বিতীয় শাখায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার শাকিল শহরের উত্তর বড়গাছা এলাকার মৃত সুজন আলীর ছেলে এবং নাটোর এন এস সরকারী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষ সম্মান শ্রেণির ছাত্র। সে কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সাকিল সক্রিয় কর্মী।
পরিবার ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার কলেজ ছাত্রলীগের আয়োজনে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দাওয়াত না দেওয়ায় শাকিল এবং তার বন্ধুরা অনুষ্ঠান বর্জন করে। সন্ধ্যায় শাকিল এবং তার বন্ধু তামিমকে সাথে নিয়ে ঈদশপিং করতে অটোরিকশায় নিচাবাজার অভিমুখে রওনা হোন। পথিমধ্যে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেনসহ কয়েকজন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে রিকশার গতিরোধ করে শাকিলকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এ সময় শাকিল দৌড়ে ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগ কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে প্রথম দফায় প্রাণে রক্ষা পায়।
পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে যাওয়ার পথে তারা দ্বিতীয়বার হামলার চেষ্টা করলে শাকিল দৌড়ে হেমাঙ্গিনী ব্রীজ সংলগ্ন সততা ডায়াগনাষ্টিকের দ্বিতীয় শাখার ভিতরে ঢুকে পরে। হামলাকারীরা ঢোকার চেষ্টা করলে সেখানকার কর্মীরা তাদের বাধা দেয় এবং দরজা লাগিয়ে আত্মরক্ষা করে। এসময় ডায়াগনাস্টিকের বাইরে অবস্থান নেন হামলাকারীরা। ৩০ মিনিট সেখানে অবস্থান করার পর প্রাণরক্ষার্থে শাকিল জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে তাদের রক্ষা করার জন্য সহযোগিতা চায়। ফোন দেওয়ার ১০ মিনিটের মাথায় রাত ৯টায় নাটোর সদর থানা পুলিশ গিয়ে দুইজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ও শাকিলকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
শাকিলের বন্ধু তামিম জানান, হামলাকারীদের সাথে অস্ত্র ছিল। ডায়াগনাস্টিক সেন্টারের কর্মীরা সাহসী ভূমিকা না নিলে আর ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেয়ামাত্র পুলিশ না এলে শাকিলকে তারা মেরেই ফেলত। ভাগ্য ভালো যে বিপদের মুহূর্তে ৯৯৯ নম্বরে কল করার কথা মনে ছিল। কী এক ভয়ংকর অবস্থা তা সেখানকার সিসিটি দেখলে বুঝতে পারবেন।
আহত ছাত্রলীগ কর্মী শাকিল জানান, তিনি সুস্থ হয়ে এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দিবেন ।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেন জানান, ঘটনা সত্যি না। আপাতত আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। ভেবেচিন্তে পরে গণমাধ্যম জানাবো।
ছাত্রলীগ কর্মী লিটন জানান, সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। আমি ঘটনার সময় নাটোর পৌরসভার মেয়রের বাসায় ছিলাম।
নাটোর সদর থানার এস আই শরিফুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর আমরা ডায়াগনাস্টিক সেন্টারের সামনে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি এবং এসময় শাকিলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই। ডায়াগনাস্টিক সেন্টারের কর্মীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে তারা অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
আরবিসি/২১ এপ্রিল/ রোজি