স্টাফ রিপোর্টার : পিতার ‘অশোভন আচরণে’ ক্ষুব্ধ হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল করেছে মতিহার হল প্রশাসন। এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহণ চত্ত্বরে প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ক্যাম্পাসে ক্রীয়াশীল প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।
এর আগে গত মঙ্গলবার গণমাধ্যম কর্মীদের অভিযোগ জানান ওই শিক্ষার্থী।
আবাসিকতা বাতিল হওয়া রোকন উদ্দিন কাউস বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের (বীর বিক্রম) নাতি এবং তার পিতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনে কর্মরত রয়েছেন। গত রবিবার (১৭ এপ্রিল) মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ তার সিট বাতিল করে উপাচার্য বরাবর এক চিঠি দেন। অভিযোগ উঠেছে, হলে ওই শিক্ষার্থীর আসন পেতে তার পিতা প্রশাসন ভবনের চাকরি করার ক্ষমতা দেখিয়ে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে ‘অশোভন আচরণ ও অপমানজনক’ কথা বলেন। এদিকে এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে হলের আবাসিকতা দেয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।
অভিযোগকারী রোকন উদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের নাতি পরিচয় দিয়ে হলের আবাসিকতার জন্য আবেদন করি। গত ২ মার্চ ১৪৬ নম্বর রুমে আবাসিকতা দিলে সেই রুমে গিয়ে দেখি মাস্টার্সের দুই ভাই আছেন। অফিসে যোগাযোগ করলে আমাকে বলে এক মাস পরে তারা চলে যাবেন তখন উঠতে পারবে। এক মাস পর গিয়ে দেখি ওই রুমে আমর পরের বর্ষের দুই ছেলেকে উঠানো হয়েছে। পরে প্রভোস্ট স্যার বলেন, এক সপ্তাহর মধ্যে তোমাকে অন্য রুমে তুলে দিব। এক সপ্তাহ পরে যোগাযোগ করলে তিনি সরাসরি নাকচ করে দেন। এবং অফিস থেকে আমাকে জানানো হয় কার্ড জমা দিয়ে ভর্তির টাকা ফেরত নিয়ে যেতে।
এদিকে উপাচার্য বরাবর পাঠানো প্রাধ্যক্ষের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রোকন উদ্দিনকে গত ২ মার্চ ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হলে সিট না থাকায় তাকে কিছু দিন অপেক্ষা করতে বলা হয়। ৬ এপ্রিল ছেলের বাবা সাক্ষাতে সিটের খোঁজ নিলে প্রাধ্যক্ষ তাকে আস্বস্ত করেন যে নতুন ব্লক চালু হলে সিট বরাদ্দ পাবে। পরে ১৩ এপ্রিল দুপুরে প্রাধ্যক্ষকে ফোন করে ছেলের বাবা রূঢ় ভাষা ও উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকে। তার এরূপ অশোভন ও অপমানজনক আচরণের জন্য রোকন উদ্দিনের হলে ভর্তি বাতিল করে হল প্রশাসন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ বলেন, হলের শৃঙ্খলা কোন কর্মকাণ্ডের জন্য কারো সিট বাতিলের এখতিয়ার হল প্রশাসরের রাখে। ছেলেকে হলে তোলার জন্য ঐ শিক্ষার্থীর বাবা একধরণের চাপ প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু একটু সময় বেশি লাগায় উচ্চস্বরে কথাবার্তা বলাসহ অশোভন আচরণ করেন তার বাবা। হলের কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি করেন বলে এসব কিছুই মানবেন না? তারা যদি তাদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান, তবে ঐ শিক্ষার্থীকে হলে তোলার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
আরবিসি/২০ এপ্রিল/ রোজি