স্টাফ রিপোর্টার : বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় আবাসিক হোটেলে নিয়ে প্রেমিকাকে হত্যা করে প্রেমিক। তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন সোমবার রাতে নাটোরের নিজ বাড়ি থেকে প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার প্রেমিকের নাম মিঠুন আলী (২৮)। তিনি নাটোর সদর থানার আগদিঘা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি ইটভাটার কর্মচারি। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
আর হত্যাকান্ডের শিকার নারীর নাম জয়নব বেগম (৪০)। তিনি নাটোর সদর থানার আটঘরিয়া গ্রামের তছির প্রামানিকের মেয়ে। তিনিও ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতো। জয়নব স্বামী পরিত্যক্ত।
গত রোববার রাতে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ড্রীম হ্যাভেন আবাসিক হোটেল থেকে এই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার দুপুরে মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
তিনি বলেন, তিন মাস ধরে জয়নব ও মিঠুনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে জয়নব বিয়ের জন্য চাপ দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছিল। এ করণে বিয়ের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে রাজশাহীর একটি হোটেলে নিয়ে জয়নবকে হত্যা করে মিঠুন। হত্যার আগে তারা শারীরিক মেলামেশা করে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, মিঠুনকে গ্রেপ্তারের সময় তার ঘরে তল্লাশী করে ঘটনার দিন ব্যবহৃত পোষক ও নিহত জযনবের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই তছলেম প্রামানিকের দায়ের করা হত্যা মামলায় মিঠুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত রোববার রাত ১২টার দিকে নগরীর লক্ষ্মীপুরে ড্রীম হ্যাভেন নামের একটি হোটেলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে তার লাশ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত নারীর নাম জয়নব বেগম (৪০)। তিনি নাটোর সদর থানার নারায়নপুর গ্রামের তসির প্রামানিকের মেয়ে। রোববার সকাল ১০টার দিকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে জয়নব ও এক ছেলে ওই হোটেলে উঠেন। লাশের ফিংগার প্রিন্ট নিয়ে জয়নবের নাম ও পরিচয় বের করা হয়।
তবে হোটেলের রেজিস্টারে ওই নারীর নাম জুলেখা (২৩) ও ছেলের নাম মিজান (২৭) লেখা রয়েছে। এছাড়াও দুইজনের বাড়ি গোদাগাড়ীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজপাড়া থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, হোটেল কক্ষে নারীর লাশ পড়ে আছে এমন খবর পেয়ে রাত ১১ টার দিকে নগরীর লক্ষীপুর ড্রীম হ্যাভেনে যায় পুলিশ। পরে পুলিশ তালা ভেঙে ওই কক্ষে প্রবেশ করে। এর পর সিআইডি সুরুতহাল তৈরী করার পর পুলিশ ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। লাশটি রুমের খাটের উপর পড়ে ছিল।
ওসি বলেন, স্বামী পরিচয় দেয়া মিজান দুপুর দেড়টার দিকে ৪০৩ নম্বর কক্ষের দরজার বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায়। রাতে মিজান না ফেরায় হোটেল কর্মচারীদের সন্দেহ হয়। এর পর তারা পুলিশকে খবর দেন।
ওসি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে হোটেলে জয়নব বেগমকে ডেকে এনে হত্যা করেছে মিজান। তাদের দুইজনের বাড়ি গোদাগাড়ীতে উল্লেখ রয়েছে। হোটেলের খাতায় তারা ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করেছে। কিন্তু পরে পুলিশ জানতে পারে ওই নারীর বাড়ি নাটোরে।
আরবিসি/১৯ এপ্রিল/ রোজি