আরবিসি ডেস্ক : নববর্ষের দিন কুমিল্লার নগর উদ্যানে দুই কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসদাচরণ, ভিডিও ধারণ এবং সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে কুমিল্লা জেলার গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দুই সদস্যকে চিহ্নিত করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই দুই সদস্যকে বরখাস্ত করা হয় বলে জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
দুই কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসদাচরণের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটি রীতিমতো ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নববর্ষের দিন কুমিল্লার নগর উদ্যানে বসে গল্প করছিল দুই কিশোর-কিশোরী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে তাদের সামনে গিয়ে পরিচয় জানতে চান ডিবি পুলিশের এক সদস্য। তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি।
এ সময় কিশোরীর মাস্ক খোলার জন্য বলতে গিয়ে তাকে ‘তুই’ করে সম্বোধন করেন পাশে থাকা আরেক সদস্য। এরপরই পরিচয় জানতে চাওয়া সদস্য ওই কিশোরকে বলেন, ‘মুড়ায়া ছাতনা ছিরালামু একবারে।’
ডিবি সদস্যরা এ সময় মেয়েটির বাবার ফোন নম্বর চাইলে তারা ভয়ে মাফ চাইতে থাকে এবং মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন বলে জানায় ছেলেটি। তখন পাশ থেকে একজন বলতে থাকেন, ‘বিদেশ থেকে (কিশোরীর বাবা) আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাবে।’
১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে ছেলেটিকে কয়েকবার মাফ চাইতে দেখা যায়। তবে কর্ণপাত করেননি পুলিশ সদস্যরা।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ যেকোনো কিছুর ভিডিও ধারণ করতে পারে দালিলিক প্রমাণ হিসেবে। তবে নগর উদ্যানের কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে যে কথাবার্তাগুলো শুনেছি, তা কাম্য নয়।
তাদের ধারণ করা এ ভিডিও কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। এ ঘটনায় যদি ওই কিশোর-কিশোরী কেউ আত্মঘাতী কোনো সিদ্ধান্ত নিত, সেক্ষেত্রে এর দায়ভার কে নিত?’
ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন।’
বিষয়টি নজরে আসার পর এদিন বিকেলে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, রাতে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরবিসি/১৬ এপ্রিল/মানিক