আরবিসি ডেস্ক : করোনা মহামারি কাটিয়ে দেশে দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনেক শিক্ষার্থীই আর স্কুলে ফিরছে না। করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে গত ২১ জানুয়ারি আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে মাধ্যমিক ও তদূর্ধ্ব প্রতিষ্ঠান ২২ ফেব্রুয়ারি আর প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মার্চ খোলা হয়।
সম্প্রতি ব্র্যাক, সেভ দ্য চিলড্রেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন, ব্রিটিশ কাউন্সিল, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, রুম টু রিডসহ ২১টি প্রতিষ্ঠানের ‘নিরাপদে স্কুলে ফিরি’ শীর্ষক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, মাধ্যমিকে নবম এবং প্রাথমিকে চতুর্থ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সবচেয়ে কম। মাধ্যমিকে গড় উপস্থিতির হার ৫৭ থেকে ৬৯ শতাংশ এবং প্রাথমিকে ৬৫ থেকে ৮৬ শতাংশ। অর্থাৎ শ্রেণিভেদে মাধ্যমিকে ৪৩ থেকে ৩১ শতাংশ এবং প্রাথমিকে ৩৫ থেকে ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনার পর শ্রেণিকক্ষে আসছে না।
শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া, পরিবারের অন্য জায়গায় স্থানান্তর, অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে কওমি মাদরাসায় স্থানান্তর এবং অধ্যয়নে আগ্রহ হ্রাস। বিশেষ করে বাল্য বিয়ের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই আর ফিরছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লকডাউনের সময় শিক্ষার্থীরা বিরক্ত, একাকী, বিচ্ছিন্ন ও মানসিক চাপ অনুভব করেছিল। এর পেছনে কারণগুলো হচ্ছে—অভিভাবকদের আর্থিক সংকট, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, বাল্যবিবাহের ঝুঁকি, শিক্ষা বন্ধের শঙ্কা, পরিবারে সমস্যা বৃদ্ধি, অনলাইন ক্লাসে উপস্থিত না হওয়া এবং পাঠ বোঝার অসুবিধা।
ছাত্ররা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ায় স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা খুবই চ্যালেঞ্জিং। তারা আরও মনে করেন, বিবাহিতদের ফিরে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। প্রতিটি উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে শিক্ষা কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার ও এনজিও প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ করা যেতে পারে। তারা ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে স্কুলে ফিরিয়ে আনবে।
আরবিসি/১৪ এপ্রিল/ রোজি