আরবিসি ডেস্ক : সাফল্য ও ব্যর্থতার মিশ্র অনুভূতি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা। প্রথম লটে আজ বুধবার দেশে ফিরেছেন ৮ ক্রিকেটারসহ ৯ সদস্যের দল। বাকিরা ফিরবেন আগামীকাল।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর দেশে ফিরে আসেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পারিবারিক কারণে তিনি দেশে ফেরেন। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ফেরেন আরও এক সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর চোটের কারণে প্রথম টেস্ট খেলতে না পারা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে দেশে ফিরে আসেন ডারবানে টেস্ট চলাকালীন ইনজুরিতে পড়া তাসকিন আহমেদ। এবার সিরিজ শেষে বাকিদের ফেরার পালা। তাতে প্রথম লটে আজ ৮ জন ক্রিকেটারসহ ৯ সদস্যের দল এসে পৌঁছান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
তিন ধাপে দেশে ফিরবে ক্রিকেট দল। প্রথম ধাপে আজ বুধবার দেশে ফিরেছেন লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুমিনুল হক, সাদমান ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, খালেদ আহমেদ ও নুরুল হাসান সোহান।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় পা রাখবে দ্বিতীয় গ্রুপ।একইদিন বিকেল পৌনে ৫টায় আসবে বাকি সদস্যরা। তিনটি ওয়ানডে ও ২টি টেস্ট খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলো বাংলাদেশ দল। প্রথমবারের মতো সেদেশে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নতুন ইতিহাস গড়ে টাইগাররা। তবে, টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে চরম হতাশা নিয়েই দেশে ফিরতে হচ্ছে মুমিনুলের দলকে।
অনেক প্রাপ্তির এক ওয়ানডে সিরিজের পর এমন একটা টেস্ট সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ, যেখানে পুরোটা জুড়েই ব্যর্থতা। প্রাপ্তির খাতায় হিসাব মেলাতে গেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না বাংলাদেশের কোনো সফলতা। ব্যাটার হিসেবে ডারবানে জয়ের এক সেঞ্চুরি আর পোর্ট এলিজাবেথে বোলার তাইজুলের ৬ উইকেটই কেবল টাইগার শিবিরের প্রাপ্তি।
ডারবান থেকে পোর্ট এলিজাবেথ, সময় বদলালেও পারফরম্যান্স বদলায়নি বাংলাদেশ শিবিরে। যেই তিমিরে ছিল দল, পোর্ট এলিজাবেথে সেখানে থেকেই শেষ করেছেন মুমিনুলরা। ম্যাচের আগে-পরে কথার ফুলঝুরি ছাড়া ব্যাট থেকে কোনো রান আসেনি অধিনায়কের। একই অবস্থা সিনিয়র ব্যাটারদেরও। একজন পেটের পীড়ায় ডারবানে না খেললেও পরের টেস্টে ধরে রাখেন ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা। আর মিস্টার ডিপেন্ডেবলখ্যাত মুশফিকুর রহিম তো এখন দলের গলার কাঁটা।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষে পরিসংখ্যানের খাতায় আফ্রিকানদের জয়জয়কার। সর্বোচ্চ রান প্রোটিয়া অধিনায়কের। ৪ ইনিংসে এলগারের ব্যাট থেকে এসেছে ২২৭ রান। আর আফ্রিকানদের ওয়ানডে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯৪। এই তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি মাহমুদুল হাসান জয়। ডারবানের এক সেঞ্চুরির কল্যাণে তার রান ১৪১।
আফ্রিকার মাটি পেসারদের ঘাঁটি, এই মন্ত্র জপতে জপতে ডারবান আর পোর্ট এলিজাবেথে স্পিন বিষে নীল হয়েছে লাল সবুজের দল। সারা বছর দেশের মাটিতে স্পিনারদের সামলালেও প্রোটিয়াদের মাটিতে তাদের মনোভাব ছিল আনকোরাদের মতো। ৪ ইনিংস বল করে ১৬ উইকেট নিয়েছেন কেশভ মহারাজ। হারমারের দখলে ১৩ উইকেট। এক টেস্ট খেলা তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন ৯ উইকেট, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
টেস্ট ম্যাচে ছক্কার হিসাব খুব একটা ধরা না হলেও এ সিরিজে এই পরিসংখ্যানটা বেশ চমকপ্রদ। সেরা ছক্কা মারা ব্যাটারের নামটা যে কেশভ মহারাজ। তবে, সিরিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ব্যাটার জয়ের। ডারবানে তার মহাকাব্যিক ১৩৭ রানটাকে টপকাতে পারেননি কেউ। আফ্রিকানদের হয়ে বাভুমার ৯৩ রানটাই সেরা।
বোলারদের মধ্যে সব পরিসংখ্যানেই এগিয়ে কেশভ মহারাজ। তার সেরা বোলিং ফিগার ৩২ রানে ৭ উইকেট। পরের জায়গাটাও তার, ৪০ রানে ৭ উইকেট। আর তৃতীয় জায়গাটা তাইজুলের। পোর্ট এলিজাবেথে ১৩৫ রান খরচায় তিনি ফিরিয়েছিলেন ৬ আফ্রিকান ব্যাটারকে।
আরও কিছু রেকর্ডের পাতা ওলট-পালট করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এই যেমন একশ’র নিচে দ্বিতীয়বারের মতো এক সিরিজে অলআউট হয়েছে তারা। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ চার ব্যাটার শূন্য রানে প্যাভেলিয়নে ফিরেছেন দুবার।
আরবিসি/১৩ এপ্রিল/মানিক