• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন

সেচ ব্যবস্থাপনায় অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার আশ্বাস

Reporter Name / ১৪৮ Time View
Update : বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সেচের পানি না পেয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা ও সেচ ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিএমডিএ চেয়ারম্যান বেগম আক্তার জাহান।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। বিএমডিএ চেয়ারম্যান বুধবার বিকালে তাদের রাজশাহীতে বরেন্দ্র ভবনে নিজ দফতরে ডেকে নেন। সেখানেই প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বিষয়ে মতবিনিময় হয়।

রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে এ সময় উন্নয়ন কর্মী মো. আরিফ, গোদাগাড়ী উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ কুমার সরকারসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ ও ভারপ্রাপ্ত সচিব ইকবাল হোসেনসহ উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীও।

বিএমডিএ চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান বলেন, বিএমডিএ কৃষকদের প্রতিষ্ঠান। কৃষকদের স্বার্থেই বিএমডিএ কাজ করে। কিন্তু কৃষকদের সঙ্গে বিএমডিএ’র যোগাযোগের ঘাটতির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে গেছে। নিবিড় যোগাযোগ থাকলে এটা হতো না। দুই কৃষক আত্মহত্যা না করে যে কোন মাধ্যমে পানি নিয়ে সমস্যার কথা জানালে তারা ব্যবস্থা নিতেন।

তিনি জানান, ঘটনার দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। পরেও তাঁকে দাফতরিক কাজে ঢাকায় থাকতে হয়েছে। তাই তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি। তবে আগামী শনিবার তিনি ঘটনাস্থলে যাবেন।

মতবিনিময়কালে রক্ষাগোলার সংগঠক মো. আরিফ বিএমডিএ চেয়ারম্যানের কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। তিনি সেচ ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বে অবহেলাকারীদের কঠোর শাস্তি, গভীর নলকূপের অপারেটর নীতিমালা পরিবর্তন ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সদস্যদের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ এবং আত্মহত্যা করা দুই কৃষকের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন। নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে কৃষক, কৃষিবান্ধব সাংবাদিক এবং সংগঠকদের সঙ্গে নিতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিএমডিএ চেয়ারম্যান এসব দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তিনি এসব ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। পরিস্থিতিই মানুষকে সবকিছু বোঝায়। মাঠপর্যায়ের সবকিছুই ঢেলে সাজাতে চাই।’ আলোচনার সময় বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, ‘কোন কোন অপারেটর গভীর নলকূপ তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। নানা অভিযোগ আসে। অভিযোগ প্রাপ্তি ও ব্যবস্থা নেওয়ার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন থেকে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেই তাকে বাদ দেওয়া হবে। কোন কথা শোনা হবে না। তিনি বলেন, জীবন একটাই। আত্মহত্যা করতে হবে কেন? অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ মার্চ গোদাগাড়ীর নিমঘুটু গ্রামের কৃষক অভিনাথ মারান্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি বিষপান করেন। এতে তাদের মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন তাদের পানি না দিয়ে ১২ দিন ধরে ঘোরাচ্ছিলেন। চোখের সামনে বোরো ধানের খেত ফেটে চৌচির হতে দেখে তারা আত্মহত্যা করেছেন।

এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে পুলিশ নলকূপের অপারেটর ও ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করে। সেদিনই বিএমডিএ তাঁকে চাকরিচ্যুত করে। আলাদা তদন্ত কমিটি করে বিএমডিএ এবং কৃষি মন্ত্রণালয় ঘটনা তদন্ত করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে গেল সোমবার ৩৫টি গ্রামের সাঁওতাল কৃষাণ-কৃষাণিরা বরেন্দ্র ভবনে আসেন।

আরবিসি/১৩ এপ্রিল/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category