আরবিসি ডেস্ক : রঙিন জীবনের রঙিন স্বপ্ন নিয়ে অনেকেই এগিয়ে চলেন জীবনে। তবে কারো জীবন বিবর্ণ হলেও কারো কারো রঙে রাঙিয়ে ওঠে। তেমনই একজন রাশমিকা মান্দানা। ভারতের জাতীয় ক্র্যাশ বলা হয় তাকে। তবে এই যে আজকের রাশমিকা তা কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি। এখানে আসতে অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়েছে তাকে।
সম্প্রতি ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। অভিনয়দক্ষতা ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের জন্য নেটদুনিয়ায় তিনি তুমুল জনপ্রিয়। বক্স অফিসে একের পর এক হিট সিনেমা দিয়েছেন তিনি।
তাকে পছন্দ করেন না এমন হয়তো কমই মিলবে। এত এত ভক্ত ও অনুরাগীর ভালোবাসা একদিনে তৈরি হয়নি। একসময় ছিল, যখন ছোট ছোট নানা কারণে বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে। তারকা ব্যক্তিদের নেটমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হওয়া এখন নৈমিত্তিক ঘটনা। জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমান তালে ট্রলের শিকার হতে হয়। সুদক্ষ অভিনেত্রী ও সুন্দরী হয়েও এর থেকে রেহাই পাননি রাশমিকা।
ক্রমাগত এই কটাক্ষ, ঘৃণা, উপহাসের মধ্যেও ভালো থাকার চেষ্টা করেছেন রাশমিকা। বাইরের মানুষের অহেতুক আক্রমণ উপেক্ষা করে নিজের মনের সঙ্গে ক্রমাগত যুদ্ধ করেছেন তিনি৷ যদিও দিনের পর দিন এই কটাক্ষের কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি।
রাশমিকার এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে শরীর নিয়ে কটাক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন রাশমিকা। সেই সাক্ষাৎকারটি সম্প্রতি আবারও ভেসে উঠেছে। কাউকে নিয়ে তামাশা করলে তা কীভাবে তার মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করে, সেটি নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। শরীর নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও ট্রলিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ যখন ক্রমাগত নিজের দেহ, গায়ের রং ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং বিদ্রুপ করতে থাকে, তখন মনে হয় আমি যেন রাস্তায় জনতার সামনে নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি৷’ শুধু শরীর নিয়েই নয়, বিদ্রুপকারীরা রাশমিকার পরিবার, ব্যক্তিজীবন, এমনকি তার স্কুল ও সামগ্রিক বেড়ে ওঠা–এই সবকিছু নিয়েই ট্রল করেছে।
পোশাক নিয়ে রাশমিকাকে প্রতিনিয়ত ট্রলের শিকার হতে হয়। কখনো আবেদনময়ী প্যান্ট পরার জন্য, কখনো-বা অন্তর্বাস নিয়ে তাকে কটাক্ষ করা হয়। একবার গাড়ি থেকে নামার সময় মাস্ক পরতে ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। সেটি নিয়েও তাকে ট্রলের শিকার হতে হয়েছে। আরেকবার ছোটবেলার একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন রাশমিকা৷ সেখানে এক নেটিজেন তাকে ‘দাগার’ বলে মন্তব্য করেন। কন্নড় ভাষায় এর অর্থ যৌনকর্মী। রাশমিকা তৎক্ষণাৎ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, কোনো ব্যক্তিকে এই ধরনের কুরুচিকর আক্রমণ করা উচিত নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তারকাদের এ ধরনের আক্রমণ করে কী লাভ? শুধু জনপ্রিয় বলেই কি একজনকে যা ইচ্ছে তা বলা যায়?
তিনি বলেন, কাজ নিয়ে সমালোচনা করুন। প্রত্যেক পেশার সম্মান আছে। অহেতুক পরিবার বা ব্যক্তিজীবন নিয়ে নোংরা মন্তব্য করবেন না। প্রত্যেককে সম্মান করা উচিত। দিনের পর দিন এসব নেতিবাচক মন্তব্যে ভেঙে পড়ছিলেন রাশমিকা। নিজেকে হারিয়ে ফেলতে শুরু করেন তিনি। নিজের অভিনয় দক্ষতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে ওঠেন। এমনকি নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন করার শক্তিও হারিয়ে যাচ্ছিল তার। এ সময়টি অত্যন্ত কঠিন ছিল। নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাভাবিক জীবনের পথে ফেরা, পুনরায় নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না, বলছিলেন রাশমিকা।
আরবিসি/১০ এপ্রিল/মানিক