আরবিসি ডেস্ক : ব্যাটের গ্রাম নামে পরিচিত পিরোজপুরের বিন্না গ্রাম। গ্রামের প্রতিটি পরিবারই ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করে। কারিগরদের বানানো ব্যাটগুলো দিয়ে খেলার সূচনা হলেও ব্যাটগুলোর কদর নেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। কাঁচা কেরোসিন কাঠের অভাব ও যথাযথ সরকারি উদ্যোদের অভাবে ব্যাটগুলোর ব্যবহার বাড়ছে না বলে আক্ষেপ কারিগরদের।
গ্রামের নাম বিন্না। পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে ছবির মতো সাজানো একটি গ্রাম। স্থানীয়ভাবে এটি ব্যাটের গ্রাম নামেই পরিচিত। এখানে প্রতিটি পরিবারই যেন একেকটি ব্যাট তৈরির কারখানা।
এই গ্রামটির ক্রিকেট ব্যাটের সুনাম আছে দেশজুড়ে। বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলার সূচনা যে ব্যাট দিয়ে, সেই ব্যাটটি এখানকারই তৈরি। কিন্তু বাধা ও সরকারি যথাযথ উদ্যোগের অভাবে বিকশিত হতে পারছে না সম্ভাবনাময়ী পরিবারভিত্তিক গড়ে ওঠা এই শিল্প।
কারিগররা বলছেন, ‘ব্যাট তৈরি করতে যেসব গাছ কিনছি, তাতে আমাদের পোষায় না। গত বছর করোনার কারণে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।’
এখানকার তৈরি ব্যাটের ডিজাইন আধুনিক হলেও তা ডিউজ বল খেলার উপযোগী নয়। শুধু কাঁচা কেরোসিন কাঠ ও সরকারি উদ্যোগের অভাবে আন্তর্জাতিক মানের ব্যাট তৈরি করতে পারছেন না এখানকার কারিগররা।
তারা বলেন, ‘ভালো কাঠ পেলে ব্যাট তৈরি করে আমরা বিদেশেও পাঠাতে পারতাম। আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ব্যাট এই কদম কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না। এই কদম কাঠ দিয়ে সাধারণ টেনিস বল খেলা যায়।’
সরকারি উদ্যোগ, কাঁচা কেরোসিন কাঠের আমদানি ও যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে এখানকার কারিগররা তৈরি করতে পারবেন বিশ্বসেরা ক্রিকেট ব্যাটও।
নেছারাবাদ বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো. শাহীদুর রহমান বলেন, ‘স্বল্প সুদে ঋণ সরবরাহ করলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। যদি কেরোসিন কাঠ সরবরাহ করা হয় এবং উন্নত মানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তবে ভালো মানের ব্যাট তারা তৈরি করতে পারবে। এগুলো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করি।’
যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, পাশাপাশি ভূমিকা রাখবে দেশে ব্যাট তৈরির সূতিকাগার বিন্নার সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে। এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্টদের।
আরবিসি/৯ এপ্রিল/মানিক