আরবিসি ডেস্ক : দাদনের টাকা ফেরত না দেওয়ায় চাতাল শ্রমিকের দুই শিশুকে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে অটো-রাইস মিলের মালিক ও সরদারের বিরুদ্ধে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ২২ দিন ঘরে বন্দি থাকার পর ৯৯৯ ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে আজ শুক্রবার দুই শিশুকে উদ্ধার করেছে। শিশু দুটির নাম সোহাগী(৭) ও লালু আহমেদ (৪)।
শিশু দুটির বাবা ইব্রাহিম জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোহাগপুর হাজি আহাম্মদ আলী অটো-রাইস মিলে আমার স্ত্রী মোছাম্মত ফাতেমা বেগম (৩০) শ্রমিকের কাজ করত। গত মার্চের ১৮ তারিখ আমার স্ত্রী সন্তান প্রসবজনিত কারণে অসুস্থ হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করাই। এসময় আমার দুই শিশু সন্তানকে অটো-রাইস মিলের সরদারের কাছে রেখে যাই এবং তাকে(জসিম) বলি, আমার স্ত্রী বেশি অসুস্থ, আমি আসতে পারব না। তুমি আমার সন্তানদেরকে এক-দুই দিন পর আমার কাছে নিয়ে আসবা। পরবর্তীতে আমার সন্তানদের নিয়ে আসতে বললে রাইস মিলের সরদার জসিম আমাকে ফোনে বলে যে, হাজি আহাম্মদ আলী অটো-রাইস মিলের পরিচালক হামিদ মিয়া, নুরুন্নবী ও সিদ্দিক মিয়া বলছে যে, তোমার কাছে যে দাদনের টাকা পাওনা আছে, সে টাকা না দিলে তোমার সন্তানদের ফেরত দিবে না। আমি ফোনে সরদার ও মিল মালিককে বলি, যে টাকা আপনারা পাবেন এই টাকা পরিশোধের জন্য আমাকে এক-দুই মাস সময় দেন। আমি টাকা দিয়ে দেব। আমার সন্তানদের ফেরত দেন। অনেক অনুনয় বিনয় করলেও তারা আমার সন্তানদের ফেরত দেয়নি। শুধু তাতেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা আমার অবুঝ দুই শিশুকে একটি কক্ষে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কোনো উপায় না দেখে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ হাজি আহাম্মদ আলী অটো-রাইস মিলের একটি কক্ষে আটকান অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে হাজি আহাম্মদ আলী অটো-রাইস মিলের পরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, আমরা কোনো শিশুকে আটকে রাখিনি। সোহাগী ও লালু আহমেদের বাবা ইব্রাহিমের কাছে আমরা ৯০ হাজার টাকা পাই। সে টাকা না দিয়ে সিলেটে পালিয়ে গেছে। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললেই সে তাঁর শিশুদের আটকের অভিযোগ করে।
সোহাগী ও লালু আহমেদের বাবা ইব্রাহিম বলেন, আমার শিশুদের যারা আটকে রেখেছে, আমি প্রশাসনের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ রহমান বলেন, ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ গিয়ে বাচ্চাদের কক্ষে আটকান অবস্থায় পায়। তাদের উদ্ধার করে আশুগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে এ বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরবিসি/৯ এপ্রিল/মানিক