আরবিসি ডেস্ক : ‘পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে’–এটাই আমরা জানি, বিজ্ঞানের বইয়েও তেমনটাই লেখা আছে। অনেক বিজ্ঞানীকে প্রাণ পর্যন্ত দিতে হয়েছে এই সত্য প্রতিষ্ঠায়। তবে বাংলাদেশে সম্প্রতি এমন একজন ব্যক্তি পাওয়া গেল যিনি দাবি করেছেন উল্টোটা। আর এতেই হাস্যরস ও ট্রলের সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের ‘গবেষক’ আমানতউল্লাহ। তার দাবি, পৃথিবীকেন্দ্রিক বিশ্বতত্ত্বের মডেল আবিষ্কার করেছেন তিনি। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, তার গবেষণার মূল বিষয় ‘পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে না, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে’।
আলমডাঙ্গা পাইকপাড়া গ্রামের জরাজীর্ণ একটি ঘরে বসে ২৬ বছর ধরে তিনি গবেষণার পর পৃথিবীকেন্দ্রিক ‘বিশ্বতত্ত্বের মডেল’ আবিষ্কার করেন। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ তার এ আবিষ্কার দেখতে ছুটে আসেন। বিভিন্ন মেলায় তার বিজ্ঞান বিষয়ের আবিষ্কার প্রদর্শন করেন।
আমানতউল্লাহর মডেল অনুযায়ী, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে না বরং সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। তিনি বলেন, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ৪০০ বছর ধরে আমরা সেই মিথ্যা আঁকড়ে ধরে আছি। পৃথিবী নয়, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে–এটাই চিরন্তন সত্য। তাই তিনি ৪০০ বছরের মিথ্যাকে বর্জন করে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে সত্যটা প্রমাণ করে আঁকড়ে ধরার আহ্বান জানান।
তিনি সময় নিউজকে জানান, পৃথিবী তত্ত্বের ওপর তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। এসব বইয়ে তার গবেষণার বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে। সরকারের সুদৃষ্টি পড়লে তার আবিষ্কারের মাধ্যমে দেশকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারবেন বলে বিশ্বাস তার।
এদিকে আমানতউল্লাহর বিশ্বতত্ত্ব মডেল নিয়ে ব্যাপক ট্রলের বন্যা বয়ে গেছে বাংলাদেশে বিজ্ঞানবিষয়ক গ্রুপগুলোতে। মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞান নামের একটি গ্রুপে রাশেদুল ইসলাম নামের একজন আমানতউল্লাহর ছবি পোস্ট করে লেখেন: ‘শুধু শুধুই নাসা মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে।’
পোস্টটিতে অনেকেই হা হা রিঅ্যাকশন দিয়েছেন। তবে অনেক পাঠক দর্শক আমানতউল্লাহর পক্ষও নিয়েছেন। আরিফুল ইসলাম নামের একজন লেখেন: “যারা ভাবছেন উনি ‘ফ্ল্যাট আর্থ’ নিয়ে কথা বলেছেন, তাদের জন্য সমবেদনা। কত সহজেই বিচার করে বসি। ওনার মূল বক্তব্য শোনার প্রয়োজন না বোধ করেই মনগড়া ঠাট্টা চলছে। এরাই নাকি আবার বিজ্ঞানের ছাত্র। লজ্জা কার পাওয়া উচিত ভেবে পাই না।”
আরবিসি/৯ এপ্রিল/মানিক