আরবিসি ডেস্ক : প্রথম রোজা থেকে গ্যাসের ভয়াবহ সংকটে যখন রাজধানীবাসী নাকাল, হাসপাতালগুলোতে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর চাপ। ঠিক তখনই ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান তার ভাঙা ঢোল আবারো বাজালেন। পুরনো সুরে তিনি বললেন, রাজধানীতে সরবরাহকৃত পানিতে কোনো দূষণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু দূষণ পাওয়া না গেলেও সবাইকে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিলেন সংস্থাটির সর্বোচ্চ এ কর্মকর্তা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার এক সংলাপে অংশ নিয়ে এ পরামর্শ দেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। ‘নগরবাসীর চাহিদা-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা)।
সংলাপে ওয়াসার এমডি বলেন, আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আইসিডিডিআর,বি বিশেষ বিশেষ এলাকায় যখন ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেল তখন তারা আমাদের অ্যাড্রেস দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে নয়টা জায়গার পানি নিয়ে আমরা টেস্ট করিয়েছি। ল্যাবরেটরি টেস্টের পরে আমাদের বিশেষ কোনো ব্যত্যয় পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, ওয়াসার পানিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ই-কোলাই পাওয়া যায়নি। যদিওবা কোথাও কোনো জীবাণু পাওয়া যায় সেখানে ক্লোরিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে। বর্তমান যে ডায়রিয়ার প্রকোপ তার সঙ্গে ওয়াসার পানির সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাকসিম এ খান বলেন, আমার বাসার পানিতেও গন্ধ আছে। শীতলক্ষ্যার পানিতে যে অ্যামোনিয়া আছে সেটা আমরা অনেকাংশে কমিয়ে এনেছি। যা একেবারে সহনীয় মাত্রা, একের মধ্যে নিয়ে এসেছি। তবে আমার নয়াপল্টনের বাসায় দূষিত পানি পরিশোধনের পরও তাতে অ্যামোনিয়ার গন্ধ থেকে যায়। তাই রাজধানীর কিছু এলাকায় পানিতে গন্ধ থাকে।
এ ছাড়া রাজধানীর বাসাবো শাহজাহানপুরসহ বিভিন্ন এলাকার পানির মান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তাকসিম বলেন, ওয়াসার সরবরাহকৃত এলাকার ৬ থেকে ৮ শতাংশ এলাকায় পানির দূষণ হয়। একটি জায়গায় পানির সংযোগের পাইপ লিক হয়ে গেলে মুহূর্তেই ১০টি বাড়িতে সেই পানি ঢুকে যায়।
রাজধানীতে রোজার আগ থেকে বেশ কয়েকদিন পানির সংকট থাকলেও ওয়াসার এমডির পাশ কাটানো সুর। তিনি বললেন, রাজধানীর পানির কোনো সংকট নেই। পরিসংখ্যানের ফিরিস্তি তুলে ধলে তাকসিম এ খান বলেন, ঢাকায় টোটাল পানির চাহিদা ২১০ কোটি লিটার থেকে ২৫০ কোটি লিটার পর্যন্ত হয়। আমাদের উৎপাদক ক্ষমতা ২৭০ কোটি লিটার। তাই রমজানে কোথাও পানির সংকট নেই।
তিন বছর আগে ওয়াসার পানির শরবত বানিয়ে খাওয়ানোর জন্য ওয়াসা ভবনে এসেছিলেন রাজধানীর জুরাইনের বাসিন্দারা। সে সময় শরবত গ্রহণ করেনি ওয়াসা। এরপর বাড়তে থাকে অভিযোগ, পানি গড়ায় উচ্চ আদালতে। পানি খাওয়ার উপযোগী নয় বলে আদালতে মতামতও দেন বিশেষজ্ঞরা। পানিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও মলের জীবাণুর উপস্থিতি রয়েছে বলেও আদালতকে জানায় বিশেষজ্ঞ কমিটি।
আরবিসি/৬ এপ্রিল/মানিক