আরবিসি ডেস্ক : ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছের মটিজিন নামের একটি গ্রামে জঙ্গল থেকে পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় চার বেসামরিক নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রামটির মেয়র, তার স্বামী ও ছেলের মরদেহ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ। প্রতিবেদনে বলা হয়, মটিজিন গ্রামে ইউক্রেনীয় এক পুলিশ সদস্যের বাড়ির পাশের জঙ্গলে অর্ধেক পুঁতে রাখা অবস্থায় চারজনের মরদেহ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে ছিলেন গ্রামটির মেয়র ওলগা সুখেঙ্কো ও তার স্বামী-সন্তান। বাকি একজনের পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহটি ইউক্রেনের কোনো সেনা সদস্যের হবে।
পুলিশ বলছে, গত ২৪ মার্চ স্বামী-সন্তানসহ ৫০ বছর বয়সী মেয়র ওলগাকে অপহরণ করে রুশ সেনারা। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদলু এজেন্সিকে স্থানীয়রা জানান, রাশিয়ার সেনাদের হামলার বিরোধিতা করায় মেয়র ও তার পরিবারকে অপহরণ করা হয়েছিল।
শুধু কিয়েভ নয়, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিউপোল ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠছে ধ্বংসের ছাপ। ইউক্রেন সেনাবাহিনী শহরটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে সেখানকার একাধিক ছবি-ভিডিও।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা প্রকাশিত এসব ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, শহরটির কোনো কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। ইউক্রেনের যে অঞ্চলটিতে আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে সেটি এ মারিউপোল।
শুধু আবাসিক এলাকা নয়, রুশ বাহিনীর বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পায়নি নগরীর বিখ্যাত থিয়েটার হলও। রয়টার্স প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায় হলটির ভেতরের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের বাস্তব চিত্র। গত ১৬ মার্চ দফায় দফায় গোলাবর্ষণের শিকার হয় স্থাপনাটি। থিয়েটার হলটি স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে জানা গেছে।
ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের দাবি, রুশ বাহিনীর ওই হামলায় কেবল এ একটি স্থানেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিন শতাধিক বেসামরিক লোক। শুধু আবাসিক ভবন কিংবা অন্য স্থাপনাই নয়, রুশ সেনারা শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার পর বিভিন্ন রাস্তা, অলি-গলিতেও স্পষ্ট হয়ে উঠছে ধ্বংসের ছাপ। যেখানে সেখানে দেখা মিলছে মরদেহের, খোঁজ মিলছে গণকবরের।
যদিও রাশিয়ার দাবি, সব কিছুই সাজানো। অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই কিয়েভের পক্ষ থেকে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ তোলা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে পুতিন প্রশাসন।
আরবিসি/৫ এপ্রিল/মানিক