আরবিসি ডেস্ক : একটা সময় বিভিন্ন সেবা নেওয়াসহ জেলা প্রশাসকের সাক্ষাৎ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হলেও এখন কালক্ষেপণ ছাড়াই প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। তথ্যপ্রযুক্তির এই আধুনিকায়নে একদিকে যেমন সেবা সহজীকরণ হয়েছে পাশাপাশি দুর্নীতি কমে নিশ্চিত হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি।
নিজ ইউনিয়নের কিছু সমস্যা নিয়ে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাহাজ্জত হোসেন। তবে জেলা প্রশাসকের রুমের সামনে অপেক্ষা নয়।
ডিসি অফিসে এসেই গন্তব্য বিশেষ একটি কক্ষে। ডিজিটাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কুইক সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্টে এসেই নিজের ফোন নম্বর ও নাম এন্ট্রি করে টোকেন সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাহাজ্জতের ফোনে চলে আসে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিশেষ খুদেবার্তা।
তাহাজ্জতের এবারের গন্তব্য জেলা প্রশাসকের কক্ষ। খুদেবার্তায় নিজের সুবিধামতো সাক্ষাতের সময় দিয়ে তাহাজ্জতকে বার্তা পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সেই বার্তা পেয়েই নির্ধারিত সময়ে জেলা প্রশাসকের কক্ষে তিনি।
পূর্বের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা ছাড়াই জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাক্ষাৎ পেয়ে খুশি তাহাজ্জত। তিনি বলেন, কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরেছি। এতে আমার উপকার হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় স্থাপন করা হয় ডিজিটাল এই ওয়ান স্টপ সার্ভিস। যেখানে এসে খুব অল্প সময়ে নিজের যে কোনো সেবাগ্রহণ করতে পারছেন একজন নাগরিক। ডিজিটাল সেবার পাশাপাশি অপেক্ষারতদের জন্য রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, বিশুদ্ধ পানি, পরিচ্ছন্ন টয়লেট সুবিধা।
সেবাগ্রহীতারা বলেন, আগে অনেক বড় লাইন ধরে বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এখন আর সেই অসুবিধা হচ্ছে না। অন্যদিকে সেবাদাতারা বলেন, উনারা টোকেন নম্বর নিয়ে বসে থাকেন। আমরা টোকেন নম্বরের সময় অনুযায়ী তাদের ডাকি, এ ছাড়া যে ধরনের কাজে উনারা আসেন সহজেই সেটি সমাধান করা সম্ভব হয়।
তথ্যপ্রযুক্তির এই আধুনিকায়নের ফলে সেবা সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতিটি কাজে এসেছে গতিশীলতা। ভবিষ্যতে সফটওয়্যারটির পরিধি বাড়িয়ে আরো নতুন নতুন সেবা যুক্ত করার পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের।
মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, আমার সামনের স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছি কে আমার সঙ্গে সাক্ষাত করতে চায়। এমনও হয় আমার কাজ থাকতে পারে সেক্ষেত্রে ম্যাসেজের মাধ্যমে তাদের জানিয়ে দেয়া হয় কবে সাক্ষাতের সময় ম্যাসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। সুবিধাটি হচ্ছে আমার কাছে যে সাক্ষাৎ করতে আসবে তার কোনো মাধ্যম ধরে আসতে হয় না। আমি তাকে সাক্ষাতের সময় দিতে বাধ্য। যদি তাকে এসএমএস না দেয় তাহলে সে আমার নামেও অভিযোগ দিতে পারে।
প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ মাগুরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আধুনিক এই সেবাগ্রহণ করছেন।
আরবিসি/৫ এপ্রিল/মানিক