• শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন

সাখাওয়াতের নিয়োগ বাতিল, রিমান্ডের আবেদন

Reporter Name / ১৩১ Time View
Update : রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘুটু গ্রামের দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর চাকরি হারালেন গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন (৩০)। নলকূপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) রোববার দুপুরে তার নিয়োগ বাতিল করেছে। বিএমডিএ’র রাজশাহী রিজিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী জিন্নুরাইন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সাখাওয়াতের নিয়োগ স্থায়ীভাবেই বাতিল করা হয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক তিনি সাখাওয়াতকে বরখাস্ত করেছেন বলেও জানান জিন্নুরাইন খান। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে গোদাগাড়ীর কদমশহর এলাকা থেকে সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ২৫ মার্চ থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর রোববার দুপুরে গোদাগাড়ী থানা পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ড চেয়েছে।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, আদালত আসামি সাখাওয়াতকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলেও শুনানি হয়নি। দু’একদিন পর শুনানি হতে পারে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাকে থানায় নিয়ে ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গত ২৩ মার্চ নিমঘুটু গ্রামের সাঁওতাল কৃষক অভিনাথ মারান্ডি (৩৭) ও তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি (২৭) বিষপান করেন। এতে অভিনাথ ২৩ মার্চ ও রবি ২৫ মার্চ মারা যান।

পরিবারের দাবি, বিএমডিএ’র ঈশ্বরীপুর-২ গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত এ দুই কৃষককে বোরো ধানের জমিতে পানি দিচ্ছিলেন না। পানি না দিয়ে দুই কৃষককে বিষ খেতে বলেছিলেন অপারেটর সাখাওয়াত। তাই তারা দুজনে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। তারা বিষপানের পর তাদের জমিতে রাতে পানি দিয়েছিলেন সাখাওয়াত। এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ মার্চ প্রথম মামলাটি হলেই সাখাওয়াত আত্মগোপনে যান। ২৪ মার্চ বাড়ি থেকে অভিনাথের মরদেহ উদ্ধারের সময় সাখাওয়াত হোসেন পুলিশের সামনেই ছিলেন। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে পানি না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়। তারপরেও পুলিশ সাদা কাগজে কৃষক অভিনাথের স্ত্রীর সই নিয়ে অপমৃত্যুর মামলা করে।

পরের দিন অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম গোদাগাড়ী থানায় গিয়ে ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াতকে একমাত্র আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। পরে হাসপাতালে রবি মারা গেলে তার ভাই সুশীল মারান্ডি বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। কৃষকদের মৃত্যু এবং সময় মতো পানি না পাওয়ার কারণ জানতে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে গোদাগাড়ীর নিমঘুটু ও ঈশ্বরীপুর গ্রাম পরিদর্শন করে স্থানীয়দের বক্তব্য সংগ্রহ করেছে।

ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কৃষকেরা কমিটির কাছে অভিযোগ করেছেন, পানি না দেওয়ার কারণেই দুই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। গত শনিবার আসামি গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও জাতীয় কৃষক সমিতি রাজশাহীতে মানববন্ধন করেছে। এর আগেও একই দাবিতে একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তদন্তের আগে বিএমডিএ তিন সদস্যের একটি কমিটি করে ঘটনা তদন্ত করেছিল।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, পানি নিয়ে কোন সংকট ছিল না। তবে গ্রেপ্তারের পর অপারেটর সাখাওয়াতের নিয়োগ বাতিল করা হলো। সাখাওয়াতের অনুপস্থিতিতে ২৫ মার্চ থেকেই অন্য একজন ব্যক্তি গভীর নলকূপটি পরিচালনা করছেন। তাকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আরবিসি/০৩ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category