স্টাফ রিপোর্টার: ধানের জমিতে সেচ না পাওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘুটু গ্রামের দুই আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও জাতীয় কৃষক সমিতির নেতারা।
শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে যৌথভাবে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। জাতীয় কৃষক সমিতির রাজশাহী জেলার সহ-সভাপতি ফরজ আলী মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন।
কৃষক সমিতির নেতা মনিরুদ্দীন পান্নার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা ও মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, কৃষক সমিতির নেতা মতিউর রহমান তপন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক গণেশ মার্ডি, আদিবাসী পরিষদের নেতা বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, দপ্তর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, আদিবাসী পরিষদের নেতা রবিন হেমব্রম।
মানববন্ধন থেকে বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত পানি সেচের প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সাখাওয়াত হোসেনের শাস্তি দাবি করে বক্তারা বলেন, গরীব আদিবাসী কৃষক জামিতে সেচের জন্য পানি চাইতে গেলে পানি না দিয়ে বিষ খেতে বলে সাখাওয়াত হোসেন। তারা এই অপমান সহ্য করতে না পেরে দুঃখে বিষ পান করে আত্মহত্যা করে। এটি শুধু আত্মহত্যা নয়, কাঠামোগত হত্যা। আমরা সাখাওয়াত হোসেনকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, গোদাগাড়ী অঞ্চলে একটি গোষ্ঠী কৃষকদের জিম্মি করে মুনাফা লাভ করে। তাদের স্বার্থের বাইরে গেলেই কৃষকরা নিজেদের নায্যতা হারায়। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে সবসময় বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। এনিয়ে আন্দোলন করা হলেও কারো টনক নড়ে না। কৃষকের এই ত্যাগ আত্মহত্যা নয়, এটি একটি লড়াই। একজন কৃষকের সর্বোচ্চ প্রতিবাদ তিনি তার জীবন দিয়ে করে গেছেন।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসানকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, মূল বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার হওয়া সত্বেও পুলিশ সাখাওয়াতকে এতোদিন পরেও গ্রেফতার করতে পারে নাই। গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল হাসান অদৃশ্য কারণে নিরব ভূমিকা পালন করে ঘটনা চেপে যেতে চাইছেন। আমরা তাকে প্রত্যাহার করে নতুন পুলিশ কর্মকর্তার দ্বারা বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।
উল্লেখ্য’ গত ২৩ মার্চ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘুটু গ্রামের দুই আদিবাসী কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডি তাদের ধানক্ষেতে পানি না পেয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনার পর তোলপাড় শুরু হলে নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা হয়। ঘটনার ১০ দিন পার হলেও অভিযুক্তকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
আরবিসি/০২ এপ্রিল/ রোজি