নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী নগরীতে এমন এক ধরণের এটিএম বুথ স্থাপন করা হচ্ছে যেখানে অর্থ নয়, মিলবে বিশুদ্ধ পানি। নির্ধারিত বুথে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে এক লিটার বিশুদ্ধ পানির মূল্য পড়বে মাত্র ৮০ পয়সা। সেই সাথে হাত ধোয়ার বুথও থাকবে সেখানে। বুথের সঙ্গে লাগোয়া একটি কক্ষে সকলের সামনেই পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
আর্থের সাশ্রয়ের পাশাপাশি এই এটিএম বুথের মাধ্যমে সরবরাহকৃত পানির মাণ বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত অন্য যেকোন পানির চাইতে বিশুদ্ধ হবে বলে দাকি করছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা। তাদের দেয়া তথ্য মতে, রাজশাহী ওয়াসা নয়তো ভূগর্ভস্থ পানির স্তর থেকে সরাসরি সংগ্রহকৃত পানি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তিনটি স্তরে ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করে তার পর তা এটিএম বুথের ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করা হবে।
এদিকে এই পানি সংগ্রহ করতে আগে থেকেই নিতে হবে কার্ড। এটিএম কার্ডের মতোই সেই কার্ডের রেজিস্ট্রেশনে খরচ পড়বে ৫০ টাকা। এরপর শুধু রিচার্জ করে নেয়। রিচার্জ করতে অন্য কোথাও যেতে হবে না। নির্ধারিত এটিএম বুথের কর্মীর কাছ থেকেই অনলাইনে কার্ড রিচার্জ করে নেয়া যাবে। পানি নিতে এটিএম কার্ডের পাশাপাশি ভোক্তাকে আনতে হবে পাত্র।
প্রথমিক ভাবে নগরীর লক্ষীপুর মোড়, কামারুজ্জামান চিড়িয়াখানার মোড়, শাহ মখুদম দরগাহ গেট ও বহরমপুর মোড় এই চারটি স্থানে স্থাপন করা হয়েছে বিশুদ্ধ পানির এই এটিএম বুথ। নাম দেয়া হয়েছে, নিরাপদ খাবার পানির এটিএম এবং হাত ধোয়ার বুথ। সূত্রমতে আজ (শনিবার) এই ৪টি এটিএম বুথের উদ্বোধন করবেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
নগরীর বিভিন্ন অফিসে ২০ লিটার জারের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভাবে সরবরাহকৃত পানিতে ভোক্তাদের যেখানে খরচ হয় ৫০ টাকা, সেখানে এই বুথ থেকে পানি নিলে খরচ পড়বে মাত্র ১৬ টাকা। তাছাড়া পানির মানের দিক থেকেও ভোক্তারা অনেকটাই নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। জিআইজেডের (এনজিও প্রতিষ্ঠান) অর্থায়নে এবং আইসিএলইআই সাউথ এশিয়া এর সার্বিক সহায়তায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এটিএম বুথের জন্য জায়গা দিয়েছে রাজশাহী সিট কর্পোরেশন।
আইসিএলইআই সাউখ এশিয়ার রাজশাহী প্রকল্পের কর্মকর্তা আব্দুলাহ আল কাফি এসব তথ্য তুলে ধরে জানান, পানির জন্য যে মূল্যের কথা বলা হচ্ছে, চেষ্টা করা হচ্ছে ভোক্তাদের স্বার্থে তা আরও কিভাবে কমানো যায়। সকাল ৮টা থেকে রাত্রি ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই বুথ। ৪টি বুথে ৪জন সার্বক্ষণিক কর্মরত থাকবেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তিনটি স্তরের ফিল্টার মেশিনের মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধ করা হবে।
তিনি আরও জানান, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। নামে মাত্র মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে নগরবাসীকে। পরিচালনা ব্যয়ের তুলনায় এই মূল্য সামান্যই বলা চলে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য মূলত সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার পানি নিশ্চিত করা এবং হাত ধোয়া বিষয়ে সমাজে সচেতনতা গড়ে তোলা। নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই প্রকল্পটি দারুন ভাবে কাজে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট এই কর্মকর্তা।
আরবিসি/২ এপ্রিল/মানিক