স্টাফ রিপোর্টার : পশ্চিমাঞ্চল রেলে যুক্ত হয়েছে আমেরিকার তৈরি ট্রেনের অত্যাধুনিক ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ)। বহস্পতিবার যাত্রীবাহী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে সংযুক্ত নীল রঙের নতুন ইঞ্জিনটি প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহী স্টেশনে চালিয়ে নিয়ে আনেন লোকোমাস্টার (চালক) তৌহিদুল ইসলাম। পরে দুপুর আড়াইটায় ইঞ্জিনটি একই ট্রেনে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রীদের নিয়ে রাজশাহী স্টেশন ছেড়ে যায়।
এদিকে স্টেশনে নতুন ইঞ্জিন দেখে সাধারণ যাত্রীরা ইঞ্জিনের সাথে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষও বিষটিকে সাভাবিক বিবেচনা করে উৎসুক যাত্রীদের ছবি তুলতে সহযোগীতা করেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রকৌশলী দপ্তর ও লোকোমাস্টারের দেয়া তথ্য মতে, আমেরিকার তৈরি ৩ হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিনটির চালক কক্ষে এসি সংযুক্ত রয়েছে। ইঞ্জিনটির সামনে ও পেছনে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। একই সাথে রাতে পথ প্রদর্শনের জন্য হেডলাইটে ব্যবহার করা হয়েছে এলইডি লাইট। ইঞ্জিনগুলোর বেধে দেয়া গতি প্রতি ঘন্টায় ১৪০ কিলো মিটার। যদিও বাংলাদেশের রেল লাইনের গড় গতিসীমার তুলনায় এই গতি বেশি।
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিন সরবরাহ করলেও প্রথমিক অবস্থায় ইঞ্জিনগুলো নিয়মিত তদারকি ও চালকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণের জন্য তাদের জনবল ইঞ্জিনের সাথে দিয়ে রেখেছেন। কোন ত্রুটি পাওয়া গেলে তা সংশোধন বা নির্ণয়ের জন্য তারা কাজ করবে। বাংলাদেশ রেলে সংযুক্ত নতুন ১৬টি ইঞ্জিনের সবগুলোই ব্রডগেজ লাইনের। ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাইনের জন্য রেলে যুক্ত হবে এই ধরণের মোট ৪০ টি ইঞ্জিন। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি নতুন ইঞ্জিন যাত্রীবাহী ট্রেনের সাথে সংযুক্ত করে ও ত্রুটি নির্নয়ে ট্রায়ালের মাধ্যমে চালিয়ে দেখা হবে।
যাত্রীদের দাবি, আরামদায়ক ভ্রমণ এবং বাসের তুলনায় যাত্রা খরচ কম হওয়ায় ট্রেনের প্রতি যাত্রীদের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। তবে যাত্রীদের তুলনায় ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি সংকটের কারণে রেলওয়ের সেবা প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ রেলওয়ে অত্যাধুনিক এই ইঞ্জিনের সংযোগ রেলের সেবার মান বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহা ব্যবস্থাপক অসিম কুমার তালুকদার জানান, অত্যাধুনিক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ঈশ্বর্দী থেকে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে সংযুক্ত করে প্রথম বারের মতো রাজশাহী স্টেশনে পৌছেছে। রেলের সেবার মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আমেরিকার তৈরি অত্যাধুনিক ৪০ টি ইঞ্জিন আনা হচ্ছে। যার মধ্যে ১৬ টি ইঞ্জিন ট্রায়ালের জন্য হস্তান্তর করেছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে ৮টি ইঞ্জিন পশ্চিম রেলের ব্রডগেজ লাইনে পরীক্ষামূলক চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। একই সাথে ট্রেনের লোকো মাস্টারদের (চালক) নতুন ইঞ্জিনের উপর প্রশিক্ষণের কাজ এগিয়ে চলেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পর্যায় ক্রমে আটটি ইঞ্জিন যাত্রীবাহী ট্রেনে সংযোজন করা হবে।
আরবিসি/৩১ মার্চ/ রোজি