স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারায় মারপিট করে অর্থ ছিনতাই ও চাঁদা দাবির মামলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত গভীর রাতে রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার হেতেমখাঁর নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের নাম সরদার জান মোহাম্মদ (৫০)। তিনি বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি।
এর আগে গত ২৭ মার্চ এই মামলায় নায়েব উল্লাহ নামের ৭৩ বছর বয়সের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছিল পুলিশ। দুইদিন পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। ১৪ বছর আগে মোহনপুর উপজেলার চকবিরহী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে অবসর নেন তিনি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশ্যে মারপিট করে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা ছিনতাই ও পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির এ মামলায় জান মোহাম্মদ ও নায়েব উল্লাহসহ নয়জন আসামীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে প্রধান আসামী করা হয়েছে জান মোহাম্মদকে। এছাড়াও এ মামলায় অজ্ঞাত আরও চারজনকে আসামী করা হয়েছে।
এজাহারের অপর আসামীরা হলেন, উপজেলার মির্জাপুর বিরহী গ্রামের মোজ্জাফর হোসেন (৩২), আব্দুল বারী (৩৫), জামাল হোসেন (৪২), আনছার আলী (৪৫), আজাদ আলী (৪৬), আনোয়ার হোসেন (২৮) ও মুগাইপাড়া গ্রামের মাহফুজ আলী (২৪)।
এদের মধ্যে জামাল হোসেন, আনছার আলী, আজাদ আলী বৃদ্ধ। তাদের বয়স ৬০ বছরের উপরে। এ মামলা দায়ের পর থেকে তারাও বাড়ি ছাড়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার হরিদাগাছী গ্রামের রেজাউল হোসেনের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন (৩২) বাদি হয়ে গত ২৬ মার্চ বাগমারা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন তার ভাতিজা জুবায়ের হোসেন (২২) স্বর্ণ ব্যবসায়ী। গত ২৫ মার্চ বিকেলে ব্যবসায়িক কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মির্জাপুর বিরহী বটতলা মোড়ে আসামীরা প্রকাশ্যে তার পথ রোধ করে মারপিট করে এবং টাকার ব্যগ নিয়ে নেয়। সেই ব্যগে এক লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা ছিল। এছাড়াও ওই এলাকায় ব্যবসা করার জন্য জুবায়েরের কাছ থেকে আসামীরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলেও মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী হিসেবে জান মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা দায়ের পর তিনি একা থেকে পালিয়ে রাজশাহী শহরে এসে আত্মগোপন করে ছিলেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় বুধবার দিবাগত ২টার দিকে নগরের হেতেমখা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি বলেন, এ মামলায় ছিনতাইয়ের কোন ধারা নেই। মারপিট করে টাকার ব্যগ চুরি ও চাঁদা দাবির ধারায় মামলাটি হয়েছে। এজাহার নামীয় আসামী হিসেবে জান মোহাম্মদ ও নায়েব উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা তা তদন্তে বের হয়ে আসবে।
আরবিসি/৩১ মার্চ/ রোজি