• বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন

নকশার ভুলে অকেজো সেতু

Reporter Name / ১১৫ Time View
Update : শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : খুলনার উপকূলীয় উপজেলা দাকোপের ভদ্রা নদীর ওপর কালীনগর-খুটাখালী সেতু নির্মাণ শুরু হয় ২০১৬ সালে। ১৮ মাসে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। এর কারণ সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশের গাইডওয়াল বালু ভরাটের সময় ভেঙে পড়ে। নকশার ভুলে এমনটি হয়েছে। এখন নকশায় পরিবর্তন এনে নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরুর চেষ্টা চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গাইডওয়ালে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারেই সেতুটির এ দশা।

দাকোপ সদর ইউপি চেয়ারম্যান বিনয় কৃষ্ণ রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সেতুর উচ্চতা অনেক বেশি। গাইডওয়ালটি মজবুত করার দরকার ছিল। কিন্তু যেনতেনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। মাটির গভীর থেকে গাইডওয়ালটি করা হয়নি। রডের পুরুত্ব ও ঘনত্বও ঠিক ছিল না। বারবার আমি এ নিয়ে চেঁচামেচি করেছি। প্রায়ই দেখতাম এলজিইডির প্রতিনিধি ছাড়াই ঠিকাদারের লোকজন কাজ করছেন। ফোন দিয়ে এলজিইডির লোকদের কাজের স্থলে আসতে অনুরোধ করেছি। আমার আশঙ্কাই ঠিক হয়েছে। গাইডওয়ালের মধ্যে বালু ভরাট করা মাত্র ভেঙে পড়েছে।’

সেতুটির পাশেই অবস্থিত দাকোপ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নির্মল কুমার রায় বলেন, ‘সেতুটি ভৌগোলিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। সেতুর অভাবে যুগের পর যুগ লাখো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ এলাকায় তরমুজ চাষে যে বিপ্লব ঘটে গেছে তার সুফল কৃষক পাচ্ছে। শহরে সহজ যাতায়াত সৃষ্টির এ সেতু চালু হলে দাকোপের এ অংশের অর্থনীতিই বদলে যাবে।’ জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ‘গুরুত্বপূর্ণ নয়টি ব্রিজ নির্মাণ’ প্রকল্পে ২০১৬ সালে কালীনগর-খুটাখালী পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এতে ৪২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়। তবে ঠিকাদাররি প্রতিষ্ঠান পিটিএসএল মৈত্রী (প্রা.) লিমিটেড ৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার চুক্তিতে সেতুটি নির্মাণের কাজ পায়। ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করে এলজিইডি। পরে ২০২০ সালে অসমাপ্ত কাজের জন্য ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকার নতুন চুক্তি হয় কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে। তারা নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় গাইডওয়ালের মধ্যে বালু ভরাট করা মাত্র তা ভেঙে দুই পাশে ধসে পড়ে। এলজিইডি দাকোপ উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ একটু কম হওয়ায় সেতু থেকে নামার সংযোগ সড়কটি কিছুটা আড়াআড়ি হয়েছে।

এভাবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলে ভবিষ্যতে সমস্যা হবে। এ ছাড়া নকশায়ও কিছুটা ভুল ছিল। এখন সংশোধন করে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।’ নিম্নমানের নির্মাণ কাজের অভিযোগের বিষয়ে কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মেহেদি হাসান চৌধুরী বাদল মুঠোফোনে বলেন, ‘ভেঙে পড়া গাইডওয়ালের কাজটি আগের ঠিকাদার করেছেন। আমরা মূল সেতুর অসমাপ্ত কিছু কাজ করেছি। সে কাজের মান যথাযথ ছিল। এ ব্যাপারে লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ জানা যায়, ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ৩০১ দশমিক ৪০ মিটার, প্রস্থ ৭ দশমিক ৩ মিটার, ভায়াডাক্ট ১৪০ দশমিক ১৬ মিটার। ব্রিজটি নির্মাণ হলে দাকোপে ৩১, ৩২, ৩৩ পোল্ডারে পানখালী, তিলডাঙ্গা, কামারখোলা, সুতারখালী, লাউডোব, কৈলাসগঞ্জ, বাজুয়া বাণীশান্তা ইউনিয়নের সড়কপথে যোগাযোগে ভোগান্তি কমবে। এ অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সড়কপথে খুলনা, মোংলাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা সহজ হবে।

আরবিসি/২৫ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category